বৃহস্পতিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা

মিন্নির আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ অর্থদণ্ড স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির খালাস চেয়ে করা আপিল গ্রহণ করেছে হাই কোর্ট। একই সঙ্গে বিচারিক আদালতের দেওয়া অর্থদন্ড স্থগিত করেছে আদালত। গতকাল বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। মিন্নির আইনজীবী মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী এ মামলার পেপারবুক তৈরি হবে। পেপারবুক তৈরি হলে প্রধান বিচারপতি মামলার শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন। এর পরই শুরু হবে আপিল শুনানি।

এ ছাড়া মামলার আরও তিন আসামি মোহাইমেন ইসলাম সিফাত, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বী আকন, মো. হাসান ও মো. রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়ের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাই কোর্ট। ২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর বহুল আলোচিত মামলার রায় ঘোষণা করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। রায়ে মিন্নিসহ ছয়জনের মৃত্যুদন্ড এবং ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়। মৃত্যুদন্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স গত ৪ অক্টোবর হাই কোর্টে আসে। এর দুই দিন পর মিন্নির পক্ষে হাই কোর্টে আপিল করা হয়। এতে ২১টি যুক্তি দেখিয়ে খালাস চাওয়া হয়। পরে আপিল করেন দন্ডিত আরও পাঁচ আসামি মো. রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় ও মো. হাসান। গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। পরে হাসপাতালে মারা যান তিনি। ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তখন দেখা যায়, মিন্নি তার স্বামীকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। রিফাত শরীফের বাবার করা মামলায় মিন্নিকে প্রধান সাক্ষীও করা হয়। পরে পুলিশ জানায়, এটি ছিল মিন্নির অভিনয়। খুনিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনি স্বামীকে খুন করিয়েছেন। তার এই দ্বৈত ভূমিকার তথ্যে মামলাটি নিয়ে বাড়তি আগ্রহ তৈরি হয়। বিচারক তার রায়ে মিন্নিকে এই হত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারী হিসেবে উল্লেখ করেন। বিচারক আসামিদের ফাঁসির আদেশ দেওয়ার কারণ উল্লেখ করে তার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে যুবসমাজের ভুল পথে অগ্রসর হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। তবে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর রায়ের দিনই আপিল করার কথা জানিয়ে রায় প্রত্যাখ্যান করেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, আমার মেয়ে মিন্নির প্রতি অবিচার করা হয়েছে। প্রকাশিত ভিডিওতে মিন্নির ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তার বাবা বলেন, সারাবিশ্ব দেখেছে মিন্নি তার স্বামী রিফাতকে বাঁচানোর জন্য জীবনবাজি রেখে অস্ত্রের মুখে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। আমি উচ্চ আদালতে ন্যায়বিচারের জন্য যাব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর