শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

মৃতের ৫২ শতাংশই ঢাকা বিভাগের

চট্টগ্রামে ২০, খুলনায় ৮ শতাংশ

জয়শ্রী ভাদুড়ী

মৃতের ৫২ শতাংশই ঢাকা বিভাগের

করোনাভাইরাস মহামারীতে বিশ্বে প্রতিদিন হাজারো মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। দেশে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৫ হাজার ৯৮৩ জন। এর মধ্যে ৫২ শতাংশ রোগীই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। এরপরে চট্টগ্রাম বিভাগে মারা  গেছেন ২০ শতাংশ রোগী, খুলনায় ৮ শতাংশ, বাকিরা অন্যান্য বিভাগে। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৭ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ১১ জন ঢাকা বিভাগের, চারজন চট্টগ্রাম বিভাগের, দুজন ময়মনসিংহ বিভাগের। এ পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩ হাজার ১১৯ জন, চট্টগ্রামে ১ হাজার ১৮৩ জন, রাজশাহীতে ৩৭২ জন, খুলনায় ৪৭২ জন, বরিশালে ২০০ জন, সিলেটে ২৫০ জন, রংপুরে ২৬৩ জন, ময়মনসিংহে ১২৪ জন।

এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রাজধানীতে ঘনবসতি বেশি হওয়ায় সংক্রমণ হার বেশি। এ জন্য মৃত্যু হারও বেশি। করোনার ভ্যাকসিন হাতে পেতে এখনো দেরি আছে। আবিষ্কৃত হওয়ার পরে সবার হাতে পৌঁছানো সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই। শীত মৌসুমে সামাজিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। বয়স্ক ব্যক্তিদের বিশেষ সতর্কতায় থাকতে হবে।’ এ পর্যন্ত করোনায় মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে পুরুষের হার বেশি। এ পর্যন্ত দেশে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের ৭৬ দশমিক ৯৫ শতাংশই পুরুষ। ২৩ শতাংশ নারী করোনায় মারা গেছেন। বয়স ভেদে মৃত্যুর হারে ১০ বছর বয়সসীমার মধ্যে মারা গেছেন ২৯ জন, ১১-২০ বছরের মধ্যে মারা গেছেন ৪৭ জন, ২১-৩০ বছরের মধ্যে মারা গেছেন ১৩৬ জন, ৩১-৪০ বছরের মধ্যে মারা গেছেন ৩৩০ জন, ৪১-৫০ বছরের মধ্যে মারা গেছেন ৭৪২ জন, ৫১-৬০ বছরের মধ্যে মারা গেছেন ১ হাজার ৫৮১ জন, ষাটোর্ধ্ব বয়সের আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে করোনায় মারা গেছেন ৩ হাজার ১১৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে মারা গেছেন ১৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ঢাকা বিভাগে ১ হাজার ২৫২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩১২ জন, রংপুর বিভাগে ৩০ জন, খুলনা বিভাগে ১০১ জন, বরিশাল বিভাগে ২৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৪ জন, সিলেট বিভাগে ১০৯ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২২ জন। দেশে বর্তমানে করোনা আক্রান্তের হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ। সুস্থতার হার ৭৯ দশমিক ৯২ শতাংশ, মৃত্যু হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। দেশে করোনা দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে তৈরি হয়েছে উৎকণ্ঠা। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা ও জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন বলেছেন, যতদিন আক্রান্ত ব্যক্তি থাকবে ততদিন করোনা সংক্রমণ থাকবে। তাপমাত্রার সঙ্গে করোনার সম্পর্ক নেই কিন্তু আমাদের কর্মকান্ডের সঙ্গে আছে। জনসমাগম হলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। তাই এবার শীতে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, গ্রীষ্মের তাপে যদি করোনার জীবাণু ক্ষতিগ্রস্তই হতো, তাহলে ইকুয়েডর, সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্রের এরিজনায় করোনায় লাশের সারি থাকত না। শীত প্রধান দেশে ঠান্ডা থেকে বাঁচতে দরজা, জানালা লাগিয়ে মানুষ গাদাগাদি করে থাকে। এ জন্য সংক্রমণ বাড়ে। আকাশ পথে যোগাযোগ বাড়ায় রোগী এক দেশ থেকে অন্য দেশে ছড়িয়ে পড়বে। আমাদের দেশে শীতে সামাজিক অনুষ্ঠান বেড়ে যাওয়ায় সংক্রমণ বাড়তে পারে।

সর্বশেষ খবর