শনিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

মাটির পাতিলে বাসা বাঁধছে পাখিরা

জামান আখতার, চুয়াডাঙ্গা

মাটির পাতিলে বাসা বাঁধছে পাখিরা

‘চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকা হবে পাখিদের অভয়ারণ্য। গাছের ডালে ডালে থাকবে পাখির বাসা। প্রকৃতি হবে ভারসাম্যপূর্ণ। সকালে পৌরবাসীর ঘুম ভাঙবে পাখির কলকাকলীতে। দূর-দূরান্তের পর্যটকরাও আসবে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার পাখিদের অভয়ারণ্য দেখতে।’

এ স্বপ্ন দেখছিলেন চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু। সে স্বপ্নের বাস্তবায়ন হতে চলেছে এখন। গাছে গাছে বাঁধা হচ্ছে মাটির পাতিল, আর তাতে বাসা বাঁধতে শুরু করেছে পাখিরা।

পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জ, সিএন্ডবিপাড়া, ছাগল খামার এলাকাসহ কয়েক স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, গাছের ডালে ডালে বাঁধা হয়েছে মাটির ছোট ছোট কলস। এতে পাখিদের আনাগোনা বেড়েছে। দেশীয় প্রজাতির পরিচিত পাখির পাশাপাশি দেখা মিলছে রং-বেরঙের নাম না জানা নানা প্রজাতির পাখির। বিশেষ করে শালিক, ঘুঘু ও বকের ঝাঁক দেখা যাচ্ছে প্রায় সময়ই।

স্থানীয়দের অভিমত, দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাখির অভয়ারণ্য তৈরি হচ্ছে। কমে আসছে শিকারিদের দৌরাত্ম্য। এতে এমনিতেই সব এলাকাই পাখির সংখ্যা বেড়েছে। এ অবস্থায় অনেকেই ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নানা উদ্যোগ নিচ্ছেন। অচিরেই এর সুফল পাবে মানুষ।

চুয়াডাঙ্গা শহরের মুক্তিপাড়ার বাসিন্দা মশিউর রহমান জানান, দীর্ঘদিন থেকেই নানা কারণে পাখিদের আবাস নষ্ট হচ্ছে। কৃষি জমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার হচ্ছে। এসব কারণেই মূলত পাখিদের সংখ্যা কমে আসছিল। এরইমধ্যে কয়েক যুবকের প্রচেষ্টায় ‘পাখির গ্রাম’ হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বেলগাছি গ্রাম। এ গ্রামের বাসিন্দা পৌর কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মণি জানান, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় প্রায় তিন হাজার মাটির পাতিল গাছের ডালে বাঁধা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ১০ হাজার মাটির কলস বাঁধা হবে। তিনি বলেন, পৌর পরিষদের প্রশংসনীয় উদ্যোগ সাধারণ মানুষকেও উদ্বুদ্ধ করছে। অনেকেই নিজ উদ্যোগে গাছের ডালে পাখির জন্য মাটির কলস বেঁধে দিচ্ছেন। চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক দায়বদ্ধতা নয়, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমার প্রত্যাশা পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে পৌরবাসীর ঘুম ভাঙবে। চুয়াডাঙ্গা শহর অচিরেই পাখির শহর হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে।’ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শামীমুজ্জামান বলেন, চুয়াডাঙ্গা পৌর পরিষদের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এর ফলে আমাদের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্যের সুরক্ষা হবে। পাখিরা তাদের নিরাপদ আবাস পাবে। বর্তমান করোনাকালে পশু-পাখিদের খাদ্য সংকট রয়েছে। সেদিকে আমাদের নজর দেওয়া দরকার।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর