শনিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

আমদানির মাছে বিষাক্ত রাসায়নিক

ফরমালিন পরীক্ষা হলেও ধরা পড়ে না ভারী ধাতু, আর্সেনিক, পারদ, সিসা ও ক্যাডমিয়াম

রুহুল আমিন রাসেল

আমদানির মাছে বিষাক্ত রাসায়নিক

মধ্যপ্রাচ্য ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল থেকে আমদানি করা সামুদ্রিক মাছে অতিমাত্রায় বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ থাকার তথ্য মিলেছে। এসব মাছের রেডিয়েশন ও ফরমালিন পরীক্ষা সঠিক প্রক্রিয়ায় হয় না। ফলে মাছে থাকা ভারী ধাতু, আর্সেনিক, পারদ, সিসা ও ক্যাডমিয়ামের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক ধরা পড়ে না। যা মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে হুমকিতে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। এ মাছ খুব সহজেই কাস্টমস খালাস দিচ্ছে বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার ফখরুল ইসলাম গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন- আমদানি হওয়া মাছের দুটো পরীক্ষা করানো হয়। এর মধ্যে রেডিয়েশন পরীক্ষা করে পরমাণু শক্তি কমিশন। আর ফরমালিন পরীক্ষা করে মৎস্য অধিদফতর। এই দুই প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র নিয়ে আমদানি করা মাছ খালাস দিচ্ছে কাস্টমস। এদিকে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, আমদানি করা মাছে বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ পরীক্ষা করে নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে চার-পাঁচ গুণ বেশি রাসায়নিক পাওয়া যাচ্ছে।

তবে বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নূরুল কাইয়ুম খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন- আমদানি করা মাছের রেডিয়েশন ও ফরমালিন পরীক্ষা সঠিকভাবে করা হচ্ছে না। ফলে পরীক্ষায় ফরমালিন, আর্সেনিক ও কেমিক্যাল ধরা পড়ে না। এ ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিকযুক্ত মাছের ২০ থেকে ২৫টি কনটেইনার এ বছরের গোড়ার দিকে ধরাও পড়েছিল। এরপর শর্ত আরোপের দাবি জানিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিল মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

তিনি জানান, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান, ইয়েমেন, কাতার, দুবাই ও পাকিস্তান থেকে সামুদ্রিক মাছ আমদানি করা হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সাগর থেকে তেল উত্তোলনের জন্য অনেক রিগ বসানো হয়েছে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের ওই অঞ্চলে তেল মিশ্রিত পানির জন্য বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরে ভেসে উঠে। এই দেশগুলো থেকেই অধিকাংশ সামুদ্রিক মাছ বাংলাদেশে আমদানি করা হচ্ছে। এই মাছের মাইক্রোবায়োলজি বা জীবাণু পরীক্ষা ছাড়াও আর্সেনিক এবং মারকারি বা পারদ পরীক্ষা করার প্রয়োজন আছে। এক্ষেত্রে বিশেষ করে ওমান ও পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আমদানি হওয়া মাছ পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

নূরুল কাইয়ুম খান আরও জানান, সামুদ্রিক মাছ আমদানির ক্ষেত্রে ফরমালিন পরীক্ষায় হেভি মেটাল বা ভারী ধাতুসহ আর্সেনিক, মারকারি বা পারদ, লেড বা সিসা ও ক্যাডমিয়াম ধরা পড়ে না। তাই মধ্যপ্রাচ্যের ওই সব দেশ থেকে আমদানি হওয়া মাছ খালাসের আগে মাইক্রোবায়োলজি বা জীবাণু পরীক্ষা ছাড়াও আর্সেনিক এবং মারকারি বা পারদ পরীক্ষা করার শর্ত আরোপ করা প্রয়োজন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর