সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
ঐতিহ্য

লালমনিরহাটের পুরাকীর্তি নিদাড়িয়া মসজিদ

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

লালমনিরহাটের পুরাকীর্তি নিদাড়িয়া মসজিদ

উত্তরের সীমান্তবর্তী কৃষিনির্ভর লালমনিরহাট জেলার অন্যতম প্রাচীন পুরাকীর্তি ‘নিদাড়িয়া মসজিদ’। এটি সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের কিসামত নগরবন্দ গ্রামে অবস্থিত।

মসজিদ কমিটির সভাপতি আমজাদ হোসেন জানান, নিদাড়িয়া মসজিদটি প্রাচীন এককক্ষের মসজিদ। এর অভ্যন্তরে একটি মাত্র কক্ষ আছে। উপরিভাগে তিনটি গম্বুজ রয়েছে। চার কোনায় চারটি পিলার আছে। মসজিদের বাম পাশে রয়েছে একটি কবর। কবরটি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া না গেলেও অনেকেই মনে করেন এটি মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সুবেদার মনসুর খাঁর।

মসজিদের মুয়াজ্জিন আনছার আলী বলেন, ১১৭৬ হিজরি সনে সুবেদার মনসুর খাঁ কর্তৃক মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। কথিত আছে মসজিদটির নির্মাতা সুবেদার মনসুর খাঁর মুখে দাড়ি ছিল না। তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন যে, তার মুখে দাড়ি হলে তিনি একটি মসজিদ তৈরি করে দেবেন। পরে দাড়ি হলে তিনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মসজিদ নির্মাণ করে দেন। তাই মসজিদটি ‘নিদাড়িয়া মসজিদ’ নামে পরিচিতি পায়। ‘নিদাড়িয়া মসজিদটি প্রাচীন পুরাকীর্তি হওয়ায় ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ও জাদুঘর এটিকে প্রাচীন পুরাকীর্তি ঘোষণা করে সাইন বোর্ড লাগিয়ে দেয়। জানা গেছে, মসজিদের ১০ একর ৫৬ শতাংশ জমি থাকলেও আট একর জমি স্থানীয় সাতটি পরিবার জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে। এনিয়ে মামলা চলছে যুগ যুগ ধরে। কিন্তু আজও উদ্ধার হয়নি এ সম্পত্তি। মসজিদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দুই একর ৫৬ শতাংশ জমি। যার মধ্যে এক একর ৫৬ শতাংশ জমিতে আছে মসজিদ ও ঈদগাহ মাঠ। বাকি এক একর জমি আবাদি। চাষাবাদ করে যা আয় হয়, তা চলে যায় মামলা পরিচালনায়। মসজিদ কমিটির সভাপতি আমজাদ হোসেন বলেন, গেল ছয় যুগ ধরে মসজিদের সম্পত্তি উদ্ধার করতে মসজিদ কমিটি আদালতে মামলা চালিয়ে আসছে। কমিটি পরিবর্তন হয়। কিন্তু, মসজিদের সম্পত্তি উদ্ধার হয় না। আমার আমলে মসজিদের সম্পত্তি উদ্ধারের ফয়সালা করেছি। বিগত এক যুগ ধরে মসজিদের সভাপতির দায়িত্বে থাকা আমজাদ হোসেন বলেন, আদালতের ডিক্রি পাওয়ার পরই আমরা বৈঠক করে মসজিদের সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোর মাঝে বাৎসরিক লিজ হিসেবে প্রদান করব।

সর্বশেষ খবর