মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

প্রতিটি ইস্যুতে মাঠে আছে জাতীয় পার্টি

-- জি এম কাদের

প্রতিটি ইস্যুতে মাঠে আছে জাতীয় পার্টি

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, সংসদ এবং সংসদের বাইরে যে কোনো ইস্যুতে জনগণের সঙ্গে রয়েছে জাতীয় পার্টি। প্রতিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। সারা দেশে সংগঠন নতুনভাবে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। পাশাপাশি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোও চাঙ্গা করা হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই জাতীয় পার্টি সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। জি এম কাদের বলেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মী জাতীয় পার্টিতে যোগদান করছেন। আস্থা ও নিরাপত্তাহীনতার মাঝে মানুষের কাছে আস্থার রাজনৈতিক শক্তি হচ্ছে জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টিই সরকারের একমাত্র বিকল্প শক্তি। দেশের মানুষ চায় জাতীয় পার্টি আরও শক্তিশালী হয়ে মানুষের কল্যাণে দায়িত্ব গ্রহণ করুক। দেশের মানুষ আগ্রহ নিয়ে জাতীয় পার্টির দিকে তাকিয়ে আছে। জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রথম বা দ্বিতীয় শক্তি হিসেবে টিকে থাকতে চায়। জাতীয় পার্টি মানুষের প্রত্যাশা পূরণের সংগ্রাম এগিয়ে নিতে রাজনীতি করছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি-শাসিত সরকারের প্রধান হিসেবে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ অনেক সংস্কারমূলক কর্মকা- করেছেন। ঔপনিবেশিক প্রথা ভেঙে উপজেলা পদ্ধতি প্রবর্তন করেছেন। ওষুধনীতি করে বাংলাদেশের ওষুধশিল্প রপ্তানিমুখী শিল্পে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এখন সবাই অনুধাবন করছেন পল্লীবন্ধুর স্বাস্থ্যনীতি ও শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন জরুরি হয়ে পড়েছে। দেশের মানুষ এখন উপলব্ধি করছেন, এরশাদই প্রকৃত দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন। ’৯০ সালের পরে তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী সংসদীয় সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু সংবিধানে ৭০ ধারা সংযোজনের মাধ্যমে ’৯০ সালের পর থেকে দেশে পরোক্ষভাবে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৭০ ধারার কারণে সংসদের কাছে সরকারের জবাবদিহি নিশ্চিত হয় না। আর জবাবদিহি নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্র বা সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয় না। জবাবদিহি নিশ্চিত না হলে দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব হয় না। ফলে দেশে দুর্নীতি ও টেন্ডারবাজি স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জি এম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ। জাতীয় পার্টিই সরকারের একমাত্র বিকল্প শক্তি। দ্বিতীয় বিকল্প শক্তি হয়েও বিএনপি রাজনীতির মাঠে দাঁড়াতে পারছে না। নেতৃত্বহীনতায় দলটির নেতা-কর্মীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তাদের আপসহীন নেত্রী এমন আপস করেই জেল থেকে বের হয়েছেন যে তিনি দেশ ও মানুষের স্বার্থে একটি কথাও বলতে পারছেন না। তাদের আরেক নেতার প্রতি বিএনপি নেতা-কর্মীদেরই আস্থা নেই। তা ছাড়া দেশের মানুষও বিএনপির কাছে প্রত্যাশা করে না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মনে করে বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জড়িত। আবার বিএনপির শাসনামলে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে- এমন ধারণাও ক্ষমতাসীনদের। তাই রাজনীতির মাঠে বিএনপির টিকে থাকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উন্নয়ন ও সুশাসনের সঙ্গে দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা নিয়ে জাতীয় পার্টি রাজনীতির মাঠে সক্রিয় আছে। পল্লীবন্ধুর শাসনামলের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে জাতীয় পার্টি। দেশের মানুষ এখন জাতীয় পার্টিকেই সরকারের বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করেন। প্রতিটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মাঠে থাকবে। ফলাফল যা-ই হোক, নির্বাচনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত জাতীয় পার্টি ভোটের মাঠ ছাড়বে না। তিনি বলেন, দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কোনো নেতা-কর্মী অবস্থান নিলে তিনি আর জাতীয় পার্টি করতে পারবেন না। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে বিশ^াসী একটি রাজনৈতিক শক্তি। জাতীয় পার্টি যতবার আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছে ততবারই আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে। তাই জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে কোনো রাজনৈতিক শক্তিই রাষ্ট্র পরিচালনার স্বপ্ন দেখতে পারবে না।

সর্বশেষ খবর