মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

নবান্ন উৎসবে রাজশাহীর কৃষক

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

নবান্ন উৎসবে রাজশাহীর কৃষক

নবান্নে মেতেছে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষক। অগ্রহায়ণের প্রথম দিন গতকাল একযোগে শুরু হয়েছে এ অঞ্চলে ধান কাটার উৎসব। বর্ণিল আয়োজনে নবান্ন শুরু হয় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চৈতন্যপুরে।

জেলার গোদাগাড়ী, চারঘাট, তানোরসহ বিভিন্ন উপজেলায় অগ্রহায়ণের শুরুর দিন থেকে শুরু হয়েছে নবান্ন উৎসব। একযোগে ধান কাটার মধুক্ষণ। রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায় নবান্ন উৎসব শুরু হয়েছে একযোগে রবিবার থেকেই।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চৈতন্যপুরে প্রতিবারের মতো এবারও আয়োজন করা হয় বর্ণিল উৎসবের। স্থানীয় কৃষক মনিরুজ্জামান এ আয়োজনের উদ্যোক্তা। সাঁওতাল নারী ও পুরুষদের ধান কাটার প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে এ উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। গতকাল বিকালে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হবিবুর রহমান ধান কাটা উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। তিনি নিজেও কাস্তে হাতে মাঠে নামেন ধান কাটতে। স্থানীয় সুধীজনদের নিয়ে সেখানে আয়োজন করা হয় নৃত্য, সংগীতসহ নানা অনুষ্ঠানের। সেখানে বাংলার নবান্ন উৎসবের আয়োজন নিয়ে এক অন্তরঙ্গ আলোচনা শুরু হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মঞ্জুর হোসেন। অতিথি ছিলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হবিবুর রহমান, রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের  উপ-পরিচালক ছামশুল হক। এর আগে গোদাগাড়ীর চৈতন্যপুরের মাঠে বাংলার কৃষক বেশে ধান কাটার কাস্তে, মাথায় মাথইল, ঘাড়ে লাল গামছা বেঁধে ধানের জমিতে ধান কাটা ও মাড়াই করা হয়। হেমন্তের শুরুতে এবার রাজশাহী অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় আগাম ধান কাটা শুরু হলেও গতকাল অগ্রহায়ণের শুরুর দিনটা অন্য আমেজে মাঠে মাঠে কাস্তে নিয়ে নামে কৃষক। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, বরেন্দ্রর চার জেলায় (রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ) পুরোদমে আমন কাটা-মাড়াই ও ঘরে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। সব খানে শুধু ধান কাটার দৃশ্য। রাজশাহী কৃষি বিভাগ জানায়, রাজশাহী জেলায় এবার আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চাষাবাদ হয় ৭৭ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে। দফায় দফায় বন্যায় ৪৭০ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরই মধ্যে খেত থেকে কৃষকের উঠানে উঠতে শুরু করেছে সোনালি আমন ধান। ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে পিঠা-পায়েশ তৈরির ধুম। কৃষি বিভাগ বলছে, এবার গড় ধানের উৎপাদন অনেক ভালো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর