বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
ঐতিহ্য

বগুড়ায় নবান্নে মাছ মেলা ঘিরে ৩০ গ্রামে উৎসব

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

বগুড়ায় নবান্নে মাছ মেলা ঘিরে ৩০ গ্রামে উৎসব

বগুড়ায় এবার নবান্নে বসেছে মাছ মেলা। আর এই মাছ মেলাকে ঘিরে জেলার দুই উপজেলার প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ জামাই মেয়ে ও আত্মীয়স্বজনকে নিমন্ত্রণ করেছে। নতুন চালের পোলাও, পায়েশ আর মাছ মেলা থেকে মাছ দিয়ে হয়েছে ভুঁড়িভোজ। মেলায় ৩০ কেজির বাঘইড় থেকে ১০ কেজির কাতল মাছ উঠেছিল। মঙ্গলবার দুটি উপজেলার মানুষ মাছ মেলা ও মেয়ে-জামাই নিয়ে করেছে দিনব্যাপী

উৎসব। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় সুন্দর করে সাজানো সিলভার কার্প, কাতলা, চিতল, রুই, ব্লাডকার্প, বিগহেড, বাঘা আইড়, বোয়ালসহ হরেক রকমের মাছ। সারি সারি দোকান, চলছে হাঁকডাক, দরদাম। এক কেজি থেকে শুরু করে ১৭ কেজি ওজনের মাছ আছে। লোকজন ব্যাপক উৎসাহের সঙ্গে কিনছেন এসব মাছ। আবার দেখতে এসেছেন অনেকেই। জানা যায়, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসবের পঞ্জিকা অনুসারে মঙ্গলবার অগ্রহায়ণের এই দিনে নবান্ন উৎসব পালন করে। জেলার শিবগঞ্জ ও নন্দীগ্রাম উপজেলায় এদিনে বসে মাছের মেলা। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ওমরপুর, রণবাঘা এবং শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা-জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে নবান্ন উপলক্ষে বসে মাছের মেলা। জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার নাগরকান্দি, হাটকড়ই, ধুন্দার ও নন্দীগ্রামে মাছের মেলা বসেছে। মাছের মেলাকে ঘিরে আশপাশের ১৫ থেকে ১৬টি গ্রামে উৎসব লেগেছে। মাছ মেলায় অনেক জেলে, মাছ খামারি, মাছ ব্যবসায়ী তাদের মাছ নিয়ে এসেছেন। উপজেলাজুড়ে প্রতিটি বাড়িতেই মেয়ে-জামাইসহ স্বজনদের আগে থেকেই দাওয়াত দেওয়া হয়। ১৮০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিগহেড ও সিলভার কার্প মাছ বিক্রি হচ্ছে। রুই ও কাতলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে। চিতল মাছ ওজনভেদে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাছ বিক্রেতা মতিয়ার হোসেন বলেন, মেলায় ছোট-বড় মিলে প্রায় শতাধিক মাছের দোকান বসেছে। প্রত্যেক বিক্রেতা অন্তত ১০ থেকে ২০ মণ করে মাছ বিক্রি করেছেন।  এদিকে জেলার শিবগঞ্জে ১২-১৪টি গ্রামের বাড়ি বাড়ি মেয়ে-জামাইসহ স্বজনদের দাওয়াত দেওয়া হয়। নবান্নে মেলা থেকে কেনা মাছ ও নতুন সবজি দিয়ে আত্মীয়-স্বজনদের আপ্যয়ন করা হয়। মেলায় প্রায় শতাধিক দোকানে রুই, কাতলা, মৃগেল, ব্রিগেড, গ্রাসকার্প, সিলভার, চিতল, বাঘার, বোয়াল, ব্লাডকার্প, ইলিশ, কার্পিও মাছ বিক্রি হচ্ছে। এসব মাছ রাজশাহী, জয়পুরহাট ও নওগাঁ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এনেছেন পাইকাররা। এক দিনের এ মেলায় বিল ও নদীর মাছের পাশাপাশি স্থানীয় পুকুরে চাষকৃত মাছও বিক্রি হয়। বছরজুড়ে বড় প্রজাতির মাছ এ মেলায় তুলে বিক্রি করেন মাছচাষিরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর