বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

বিভক্তির কারণে দলগুলো সফল হচ্ছে না

-জোনায়েদ সাকি

বিভক্তির কারণে দলগুলো সফল হচ্ছে না

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, এ দেশে বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরির ক্ষেত্রে বাম দলগুলোর বড় ভূমিকা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের দুর্বলতা, মতাদর্শের ভিন্নতা এবং বিভক্তির কারণে সাফল্য লাভ করতে পারেনি। তবে অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হলে দলগুলোর ভালো ভবিষ্যৎ রয়েছে।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বাম দলগুলোর রাজনীতি প্রসঙ্গে একজন পর্যবেক্ষক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, রাজনৈতিক সাফল্য অর্জন করতে না পারায় অনেক সময় নানা চাপ ও হতাশার সৃষ্টি হয়। অনেক ক্ষেত্রে হতাশার কারণে বাম দলগুলো সফল হতে পারেনি। সে জন্য অনেক সময় দলচ্যুতি বা দল ভেঙে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে জোট করতে দেখা যায়। তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে শাসক শ্রেণির অগণতান্ত্রিক আচরণের কারণে বাম দলগুলো সুবিধা করতে পারেনি। গণতান্ত্রিক রাজনীতি বিকাশের জন্য গণতান্ত্রিক পরিবেশ অপরিহার্য। তিনি বলেন, বামপন্থিদের নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। শাসক শ্রেণির বাধা, লুটপাটের রাজনীতি, স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা বাম আন্দোলন বিকাশের প্রধান বাধা। পাশাপাশি বামপন্থিদের নিজেদের ভিতরে কিছু সমস্যা রয়েছে। এর ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কীভাবে জনগণের কাছাকাছি যেতে হবে বামদের সেই ভাবনা-চিন্তায় এখনো যথেষ্ট পরিণতি আসেনি। তারপরও জনগণের কাছে বিকল্প শক্তি হিসেবে দাঁড়ানোর জন্য বামপন্থিরা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে ধীরে ধীরে। বামপন্থিদের ভোট দিন দিন কেন কমছে জানতে চাইলে জোনায়েদ সাকি বলেন, প্রহসনের নির্বাচন, নির্বাচনে টাকার খেলা, পেশিশক্তি এবং প্রশাসনিক কারসাজির কারণে বাম দলগুলোর ভোট কমে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থায় দেশের মানুষ ভোট দিতে পারছে না। ফলে ভোটের ফলাফলের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। এ ছাড়া যেখানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একেকজন প্রার্থী নির্বাচনে কোটি টাকা খরচ করে সেখানে একজন বামপন্থির পক্ষে এত টাকা খরচ করা সম্ভব হয় না। নির্বাচনে প্রার্থীদের ব্যয় নির্দিষ্ট থাকলেও এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনও কিছু করে না। এই পরিস্থিতি বামপন্থিদের জন্য প্রতিকূল। নিজের দল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে জনগণের আকাক্সক্ষা বাস্তবায়ন এবং গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে গণসংহতি আন্দোলন কাজ করে যাচ্ছে। জোনায়েদ সাকি বলেন, এটা একটা ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারী শাসন। এর মধ্যে গণতন্ত্রের ন্যূনতম কিছু নেই। এখানে যে নির্বাচনের নামে তামাশা হচ্ছে সেই তামাশার সঙ্গে বিনোদন জোগাচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। যারা জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে মানুষের অধিকারের সঙ্গে তামাশা করছেন, মানুষকে অপমান করছেন, সেদিক থেকে আমরা মনে করি, বাংলাদেশের মানুষের ন্যূনতম ভোটের অধিকার নেই। কেবল তাই নয়, জীবনের নিরাপত্তাও নেই।

সর্বশেষ খবর