বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
সংসদে বিরোধী দলের এমপিরা

বিদেশে টাকা পাচার করে রাজত্ব গড়েছেন অনেকেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংসদে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা এক ব্যক্তির কোম্পানি খোলার বিষয়ে আনীত বিলের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তারা বলেছেন, এই আইনের সুযোগ নিয়ে এক পরিবারের একাধিক সদস্য, একাধিক কোম্পানি গঠন করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে অর্থ লুট করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যমান আইনেই কোম্পানির নামে অনেকে লোন নিয়ে বাইরে গিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন। দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। অথচ সাধারণ মানুষ কষ্টের জীবনযাপন করছেন। কোম্পানির মালিকরা বিদেশে পাচার করা টাকায় সেখানে রাজত্ব গড়ে তুলেছেন। রাষ্ট্রের টাকা যারা লোপাট করেন, সেটা দেখতে হবে। ‘কোম্পানি (দ্বিতীয় সংশোধন) বিল-২০২০’ বিলের ওপর আনীত প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বলেন, ‘বিলটির উদ্দেশ্য ভালো। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে কোম্পানি শুনলে ভয় লাগে। এক বাড়িতেই ১০টা কোম্পানি গড়ে ওঠে কিনা। এক পরিবারের ১০ জন টাকা তুলে বিদেশ চলে যান কিনা সে শঙ্কাও আছে।’ ফখরুল ইমাম বলেন, ‘ইজি অব ডুয়িং বিজনেজ ইজি না। ওয়ানস্টপ সার্ভিস করা হয়েছিল। সেটা করা গেলে বিজনেস ইজি হতো। সুবিধা হলো কোম্পানি খোলার সঙ্গে সঙ্গে ইনকাম ট্যাক্স পুরো দিতে হয় না। প্রপার্টি প্রটেকটেড থাকে।’

শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, ‘প্রাথমিক উদ্দেশ্য অসংখ্য উপায় আছে। এটা সহজ কাজ। সূচক বাড়বে কিন্তু সার্বিক ব্যবসার সূচক বাড়বে না। ব্যাংক থেকে অর্থ লুট বড় বাধা। কোম্পানি খোলা হয়েছে কর্মচারীর নামে। পাঁচ জায়গায় লোন নেওয়া হয়েছে। এক লাখ কোটি টাকা লুট হচ্ছে। সেখানে সতর্ক হওয়া উচিত। কোম্পানি মানেই একাধিক ব্যক্তি। এর ফলে এক সদস্যবিশিষ্ট কোম্পানি যেভাবে ব্যবসা করত, এক ব্যক্তির কোম্পানি ব্যবসা করতে পারবে। ব্যাংক সিন্ডিকেটের কোম্পানি আছে। যারা ব্যাংক লোন নেয়। পরিবারের বিভিন্ন লোক লোন নিয়ে ফ্রড করে।’

বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, ‘ডুয়িং বিজনেসে আট ধাপ এগিয়েছিল। এমনভাবে বলা হলো বিরাট উন্নয়ন হয়েছে। ভারত ৬৩, নেপাল ১৬ ধাপ, ২৮ ধাপ এগিয়ে পাকিস্তান। দক্ষিণ এশিয়ায় সপ্তম অবস্থানে বাংলাদেশ। শুধু আফগানিস্তান পেছনে। এই সূচকে উন্নয়ন জরুরি।’ বিএনপির মোশাররফ হোসেন বলেন, কোম্পানি খুলে অনেকে লোন নিয়ে বাইরে গিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন। তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। নতুন আইনের সুযোগে দেশের অর্থ যাতে বিদেশে পাচার হয়ে না যায়, ব্যাংকের টাকা যেন তছরুফ না হয় এবং রাষ্ট্রের টাকা যেন লোপাট করতে না পারে সেটা দেখতে হবে।

সর্বশেষ খবর