শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

আগের রোল নম্বরেই পরের ক্লাসে উঠবে প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা

টিউশন-আইসিটি ছাড়া মাধ্যমিকে কোনো ফি নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের পরের ক্লাসে ওঠার ক্ষেত্রে রোল নম্বরের কোনো পরিবর্তন হবে না। বর্তমানে যে রোল নম্বর রয়েছে সেই রোল নম্বরেই পরের শ্রেণিতে উঠবে তারা। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাই তাদের মূল্যায়ন করবেন।

গতকাল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে সব বিভাগীয় উপপরিচালক, জেলা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষকদের এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক সাংবাদিকদের বলেন, চলতি বছরের প্রথম আড়াই মাসের ক্লাস এবং করোনাকালীন যেসব শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হয়েছে, সেগুলোর ভিত্তিতে তাদের মূল্যায়ন করা হবে। তিনি বলেন, প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের ১৬ মার্চ পর্যন্ত ক্লাস হয়েছে। সেই সময় তাদের ক্লাস টেস্ট নেওয়া হয়েছে, শিক্ষকরা পড়িয়েছেন, এখন সেসব মূল্যায়নে আনা হবে। করোনাভাইরাস মহামারীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটির মধ্যে সংসদ টেলিভিশন, বেতার, কমিউনিটি রেডিও এবং জুম প্ল্যাটফরমে যেসব শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হয়েছে, সেগুলোও মূল্যায়ন করা হবে। এ ছাড়া ছুটির মধ্যেও অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়া দিয়ে পড়া আদায় করেছেন জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, সে সবও তারা মূল্যায়নে আনবেন। এর বাইরে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন, যার তথ্য-উপাত্ত শিক্ষকদের কাছে রয়েছে, সে সবও মূল্যায়নে আনা হবে। এসব বিষয় মূল্যায়ন করা হলেও তা পরের শ্রেণিতে ওঠার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়বে না।

টিউশন-আইসিটি ছাড়া মাধ্যমিকে কোনো ফি নয় : করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা এবং অভিভাবকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি নেবে মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া স্কুলের বেসরকারি কর্মচারী ফি ও আইসিটি বাবদ ফি নেওয়া যাবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট, টিফিন, পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ও উন্নয়ন বাবদ কোনো ফি নেওয়া হবে না। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তা নিলেও ফেরত দিতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা গতকাল প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে গত বুধবার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছিল মাউশি। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, কভিড-১৯ এর কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি নিয়ে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অভিভাবকদের মতদ্বৈততা পরিলক্ষিত হচ্ছে। কিছু অভিভাবক বলছেন, একদিকে স্কুল বন্ধ ছিল, আর অন্যদিকে করোনার সময়ে তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। অতএব তাদের পক্ষে টিউশন ফি দেওয়া সম্ভব নয়। অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, তারা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অব্যাহত রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। উপরন্তু প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ও স্কুল রক্ষণাবেক্ষণ খাতে প্রতি মাসে তাদের একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতেই হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়, ‘আমাদের যেমন অভিভাবকদের অসুবিধার কথা ভাবতে হবে, অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যেন বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে না যায়, কিংবা বেতন না পেয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবন যেন সংকটে পতিত না হয় সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।’ সব বিষয় বিবেচনা করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের আওতাধীন সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি নেবে। কিন্তু অ্যাসাইনমেন্ট, টিফিন, পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ও উন্নয়ন বাবদ কোনো ফি নিতে পারবে না, বা নিয়ে থাকলে তা ফেরত দেবে। এ ছাড়া অন্য কোনো ফি নিয়ে তা ব্যয় করা না হলে তা একইভাবে ফেরত দেবে। তবে যদি কোনো অভিভাবক চরম আর্থিক সংকটে পতিত হন, তাহলে বিষয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ বিশেষ বিবেচনায় নেবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ২০২১ সালের শুরুতে যদি কভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এমন কোনো ফি যেমন- টিফিন, পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন, উন্নয়ন ফি নেবে না, বা ওই নির্দিষ্ট খাতে শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যয় করতে পারবে না। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় আগের মতো সব ধরনের যৌক্তিক ফি নেওয়া যাবে।

সর্বশেষ খবর