মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
অন্যরকম

বাঁশির সুরে জীবন-জীবিকা

সাইফুল ইসলাম বেগ, বিশ্বনাথ (সিলেট)

বাঁশির সুরে জীবন-জীবিকা

বাঁশিতে হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া সুরের মূর্ছনা। আপন মনে সুর তুলছেন তিনি। কাঁধে ঝুলানো বাঁশিভর্তি ব্যাগ। সুরের জাদুতে তাকে ঘিরে ভিড়। কারও প্রিয় গানের সুর তোলার আবদার, কেউ বা কিনছেন বাঁশি। জীবন-জীবিকার তাগিদে হাটে-মাঠে বাঁশিতে সুর তোলেন কবির সরকার (৪৯)। ৩১ বছর ধরে বাঁশির সঙ্গে মিতালি তার। প্রথমে শখের বশে। এখন বাঁশির সুরেই চলে সংসার। কবিরের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রোয়াচালা গ্রামে। বর্তমানে গাজীপুরে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তিনি। গত বরিবার বিকালে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা সদরে বাঁশি বিক্রি করতে আসেন তিনি। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ছোটবেলা থেকেই বাঁশির প্রতি দুর্বলতা তার। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাঁশি বাজানোর চেষ্টা করেন। পরে ওস্তাদ সিরাজ মিয়ার কাছে তালিম নিয়ে আয়ত্তে আনেন সুর। এরপর বিভিন্ন গানের দলে বাঁশি বাজাতেন নিয়মিত। ১৯৮৮ সালে সংগীত শিল্পী আবদুল জব্বারের সঙ্গেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাঁশি বাজাতেন। এভাবে বাঁশিই হয়ে ওঠে তার জীবনের অনুষঙ্গ। দেশাত্মবোধক ও আধুনিক গানসহ সব ধরনের গানের সুর অনায়াসেই তুলতে পারেন তিনি। গত দুই বছর ধরে নিজেই বাঁশি তৈরি করে হাটে হাটে সুরের মূর্ছনা ছড়িয়ে বিক্রি করে বেড়ান। যা আয় হয় তা দিয়েই করেন জীবিকা নির্বাহ। তিনি জানান, ‘নিয়মিত বাঁশি না বাজালে মন অস্থির হয়ে ওঠে। তা ছাড়া মনে দুঃখ-কষ্ট জমলে বাঁশিতে ফুঁক দিই। প্রশান্তি লাগে মনে। এখন আগের মতো নিয়মিত গানের অনুষ্ঠান না হওয়ায় জীবিকা নির্বাহ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। যেহেতু বাঁশিই আমার সাধনা। তাই অন্য পেশায় না জড়িয়ে নিজের তৈরি বাঁশি বিক্রি করে সংসার চালাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর