বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
যমজ নবজাতকের মৃত্যু

শুনানিতে চার অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

তিন হাসপাতাল ঘুরে নবজাতক যমজের মৃত্যুর ঘটনার শুনানিতে চার অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ দিয়েছে হাই কোর্ট। আদালত এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য শুনবে। গতকাল বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাই কোর্ট বেঞ্চে শুনানি হয়।

এর আগে সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের ব্যাখ্যা দাখিল করে। চার অ্যামিকাস কিউরি হলেন- আইনজীবী জেড আই খান পান্না, ড. শাহদীন মালিক, মনজিল মোরসেদ এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের একজন জ্যেষ্ঠ শিশু বিশেষজ্ঞ। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। মুগদা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সুপারিনটেন্ডেন্টের পক্ষে আইনজীবী আবদুুল খালেক, শিশু হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর  সৈয়দ শফি আহমেদের পক্ষে আইনজীবী মাহবুব শফিক এবং বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালের উপপরিচালকের পক্ষে আইনজীবী কাজী এরশাদুল আলম ব্যাখ্যা দিয়ে এসব প্রতিবেদন জমা দেন। যমজ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ২ নভেম্বর তিন হাসপাতালের কাছে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়ে নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। মৃত যমজ শিশুর বাবা মো. আবুল কালাম আজাদ ওই দিন জানিয়েছিলেন, সকালে তার স্ত্রী সায়েরা খাতুন অসুস্থবোধ করেন। পরে তাকে মুগদা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল নেওয়ার পথে সিএনজির মধ্যে ২টি সন্তান প্রসব করেন। পরে মুগদা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যমজ শিশু দুটি অপরিপক্ব থাকায় তাদের এনআইসিইউ দরকার। কিন্তু তাদের হাসপাতালে সে ব্যবস্থা না থাকায় এনআইসিইউ আছে এমন কোনো হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। পরে নবজাতকদের শ্যামলীতে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নেওয়া হয়। দীর্ঘক্ষণ সেখানে থাকার পর শিশু হাসপাতাল থেকে জানানো হয় তাদের এনআইসিইউ খালি নেই। নরমাল বেডে ভর্তি করতে হবে। এ জন্য দিনে প্রতি বাচ্চার জন্য ৫ হাজার করে টাকা লাগবে। এ সময় আবুল কালাম আজাদ হাই কোর্টের বিচারপতির সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ করেন। বিচারপতি তার নবজাতকদের বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালে নিয়ে আসতে বলেন এবং পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালে নিয়ে আসেন এবং পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরিচালকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জানান, পরিচালক মিটিংয়ে আছেন। পরে বিচারপতি বঙ্গবন্ধু হাসপাতালের পরিচালকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন। বিষয়টি ক্রিটিক্যাল উল্লেখ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে এবং পরিচালককে বিষয়টি অবহিত করতে বলেন। পরে পরিচালকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা একজন চিকিৎসককে দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে নবজাতকদের দেখান। তখন চিকিৎসক বলেন, যমজ নবজাতক আর বেঁচে নেই। এরপর মৃত দুই সন্তানকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাই কোর্টে নিয়ে আসেন বাবা। বিচারপতি পুরো ঘটনা তার কাছ থেকে শুনে স্বতঃপ্রণোদিত  হয়ে তিন হাসপাতালের ব্যাখ্যা চেয়ে আদেশ দেন। পরে রাজধানীর মান্ডা বাসার কাছে কবরস্থানে সন্তান?দুটিকে দাফন করা হয়েছে বলে জানান বাবা আবুল কালাম আজাদ। যথাসময়ে হাসপাতালে ভর্তি নিলে হয়তো তার সন্তান দুটি বাঁচত বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর