শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

রিটার্ন দাখিলে উপচে পড়া ভিড়, সময় বাড়ল এক মাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা মহামারীর মধ্যেও সব ব্যক্তি-শ্রেণির করদাতার আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন দাখিলে কর অফিসগুলোতে দিনভর উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। গতকাল দুপুর পর্যন্ত ৫০ লাখ ৭২ হাজার করদাতার মধ্যে ১৫ লাখ রিটার্ন দাখিল করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে করোনাকালে শেষ মুহূর্তে রিটার্ন জমা দাখিলের সময় এক মাস বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

গতকাল সেগুনবাগিচার রাজস্ব ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু   হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। তিনি বলেন, যে করদাতারা এখনো আয়কর রিটার্ন জমা দেননি, তারা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জমা দিতে পারবেন। আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর সোমবারই ছিল রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে এনবিআরের ক্ষমতা প্রয়োগ করে আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ব্যক্তি পর্যায়ের করদাতাদের সুবিধার্থে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার সময় এক মাস বৃদ্ধি করা হলো। এখনো কর অঞ্চলগুলোতে ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অন্য বছর নাগরিকদের কর দিতে উৎসাহিত করতে কর মেলার আয়োজন করা হলেও করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এবার সে আয়োজন হয়নি। প্রসঙ্গত, প্রতি বছর ৩০ নভেম্বরই বিনা জরিমানায় আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন থাকে। আয়কর অধ্যাদেশের নিয়ম অনুযায়ী, কেউ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন দিতে না পারলে যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে দুই থেকে চার মাস পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে নিতে পারেন। সে জন্য নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হয়। তখন একজন কর কর্মকর্তা আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী জরিমানা, করের ওপর ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত সরল সুদ কিংবা করের টাকার ওপর মাসিক ২ শতাংশ হারে বিলম্ব সুদ আরোপ করতে পারেন। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট পাশের আগে করোনাভাইরাস মহামারী বিবেচনায় রাষ্ট্রপতি একটি অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন। সেই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, এনবিআর চাইলে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের যে কোনো জরিমানা ও সুদ মওকুফ করে দিতে পারবে। বাজেট অধিবেশনে এনবিআরের এ ক্ষমতাকে আয়কর অধ্যাদেশের ১৮৪(জি) ধারা হিসেবে যুক্ত করা হয়। ফলে নির্ধারিত সময়ে রিটার্ন না দিলে এনবিআর একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জরিমানা ও সুদও মওকুফ করতে পারে।

অর্থ পাচার ঠেকাতে ‘বিশেষ সুবিধার’ পক্ষে এনবিআর : এরআগে গতকাল সকালে জাতীয় আয়কর দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মু. রহমাতুল মুনিম বলেছেন, দেশে ‘কর দেওয়ার ভয়ে’ যারা বিদেশে অর্থ পাচার করছেন, বিশেষ কর সুবিধা দিয়ে হলেও তাদের টাকা পাচার বন্ধ করা উচিত। কীভাবে পাচার রোধ করা যায় তা নিয়ে এনবিআর চিন্তাভাবনা করবে।

 যারা দেশে কর দেওয়ার ভয়ে বিদেশে টাকা পাচার করে দিচ্ছেন, তাদের জন্য বিশেষ কর সুবিধা দেওয়া যায় কিনা, আমাদের চিন্তাভাবনা করতে হবে। 

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ মধ্যম আয় এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার যে লক্ষ্য ঠিক করেছে, তা বাস্তবায়ন করতে হলে রাজস্ব আহরণ ‘অনেক’ বাড়াতে হবে। সে জন্য ‘করদাতাবান্ধব পরিবেশ’ সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে করনেট সম্প্রসারণের পাশাপাশি কর আইন আরও সহজ করা উচিত।

সেমিনারে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত, রাষ্ট্রায়ত্ত গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)-এর জ্যেষ্ঠ রিসার্চ ফেলো নাজনীন আহমেদ এবং প্রাইসওয়াটার হাউসকুপারস বাংলাদেশের ম্যানেজিং পার্টনার মামুন রশিদ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর