অসময়েও তরমুজ চাষ করে ব্যাপক লাভবান ওরা চারজন। এদের দেখে অনেকে এগিয়ে আসছে এ সময়ে তরমুজ চাষে। ব্ল্যাক বেবি জাতের তরমুজ চাষে স্থানীয়ভাবে নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা ব্যাপক। করোনার এই সময়ে ইউটিউবে তরমুজ চাষ দেখে আবাদ শুরু করে সফলতার মুখ দেখেছেন দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার নাফানগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের প্রভাষক মো. হুমায়ুন জলিলসহ চারজন। তরমুজ চাষের প্রথম ধাপে তাদের খরচ হয় প্রায় ৭ লাখ টাকা। বিক্রয় করে তারা পায় প্রায় ৮ লাখ টাকা। এখন তাদের তরমুজের বাগানের ছোট-বড় মাচায় বাতাসে দুলছে হাজারো ব্ল্যাক বেবি তরমুজ। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে ভালো ফলন ফলাতে সক্ষম হওয়ায় লাভের স্বপ্নও দেখেন তারা। ব্ল্যাক বেবি নামের তরমুজ জাতটি বারো মাসই চাষ করা যায়। মাচা পদ্ধতিতে চাষ করা হয়। দুই মাসেই ব্ল্যাক বেবি তরমুজটির ভালো ফলন হয় এবং বিক্রয় করা যায়। বাজারে ভালো চাহিদা, আকর্ষণীয় দাম, রং, স্বাদের কারণে লাভজনক হওয়ায় এ জাতের তরমুজ চাষে এগিয়ে আসছে অনেকে। দিনাজপুর অঞ্চলের জলবায়ু, মাটি এ তরমুজ চাষে উপযোগী, তাই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অনেক কৃষক। প্রভাষক মো. হুমায়ুন জলিল জানান, শিক্ষকতার পাশাপাশি অবসর সময়ে বসে না থেকে ইউটিউবে দেখে চারজন মিলে তরমুজ চাষের পরিকল্পনা করি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির দিকে বোচাগঞ্জের ইশানিয়া ইউপির বকুতলায় তিন একর জমি লিজ নেওয়া হয়। এরপর তরমুজ চাষ শুরু। চাষ শুরুর পর এখানে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ জন নারী-পুরুষ কাজ করছে। যাতে কিছু বেকার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করি। তিনি জানান, তরমুজ চাষের প্রথম ধাপেই এক লাখ টাকা লাভ হয়। প্রথম ধাপে খরচ একটু বেশি হয়। কারণ মাচায় চাষ করতে হয়। মাঠ থেকে প্রতি কেজি ৫০ টাকা দরে বিক্রয় করে থাকি। ব্ল্যাক বেবি তরমুজগুলো সাধারণত ৩ থেকে ৪ কেজি ওজনের হয়। তরমুজ চাষাবাদ দেখাশোনার জন্য চুয়াডাঙ্গা থেকে ছামাদ আলী নামে একজন দক্ষ লোক আনা হয়েছে। আমি ইউটিউব দেখে তরমুজের পরিচর্যা করি। বোচাগঞ্জে বারো মাসি তরমুজটি ব্যাপকহারে চাষ বাড়বে বলে আশা করি। বোচাগঞ্জ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা আরিফ আফজাল জানান, বোচাগঞ্জ উপজেলায় সাড়ে ১৩ হেক্টর জমিতে ব্ল্যাক বেবি তরমুজ আবাদ হচ্ছে। এর মধ্যে উপজেলার বকুলতলা, ডহরা, নাফানগর এলাকায় কৃষকেরা ব্ল্যাক বেবি তরমুজটি আবাদ করছে। উল্লেখ্য, ব্ল্যাক বেবি তরমুজের জাতটি ভারতের। বাংলাদেশে প্রথম চুয়াডাঙ্গায় চাষ হয়। পরে জয়পুরহাট, মেহেরপুর ও ঢাকার ধামরাইয়ের পর দিনাজপুরের চাষিরাও এই তরমুজ চাষ শুরু করেন।
