শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
উদ্ভাবন

ধানের জাত উন্নয়নে নতুন সম্ভাবনা

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

ধানের জাত উন্নয়নে নতুন সম্ভাবনা

গবেষণার মাধ্যমে স্থানীয় সুগন্ধি রানীসেলুট ধানের জাত উন্নয়নে আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি অর্জন করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে দেহকোষে মিউটেশন (সোমাক্লোন) ঘটিয়ে উন্নত জাত তৈরি করা হয়েছে। গতকাল খুবি ক্যাম্পাসের ধানের গবেষণা প্লটের নমুনা ফসল কাটা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেন, বর্তমানের রানীসেলুটের চেয়ে নতুন জাতের ধানের চাল আকারে অনেকটা  ছোট ও খেতে সুস্বাদু। উচ্চফলনশীল এ জাতের ধানের বৈশিষ্ট্য হলো স্থানীয় জাতের চেয়ে ফলন বেশি ও প্রায় এক মাস আগে ফসল কর্তনযোগ্য। জানা যায়, ২০১৭ সালে খুবির অ্যাগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্লান্ট ব্রিডিং ও বায়োটেকনোলজি ল্যাবরেটরিতে খুলনা অঞ্চলের রানীসেলুট, কাচড়া ও চিনি আতপ ধানের জাত উন্নয়নে গবেষণা শুরু হয়। টিস্যু কালচার গাছের ভিতর থেকে রানীসেলুট জাতের গাছ সিলেকশন করা হয়, যা মাতৃগাছের চেয়ে অন্তত এক মাস আগে ফলন দেয় এবং এর বীজ মাতৃগাছের বীজ থেকে আকারে ছোট। এ ধানের ফলন মাতৃগাছের তুলনায় বেশি পাওয়া যায়। গবেষণায় ২০১৯ সালে এ ধানের গড় ফলন পাওয়া যায় হেক্টরপ্রতি ৩ টন। সোমাক্লোনের ১ হাজার বীজের ওজন ২০ গ্রাম যেখানে মাতৃগাছের বীজের ওজন ৩১ গ্রাম। চলতি আমন মৌসুমে ২৯ জুলাই ধানের বীজ বপন করা হয়। এ বছরও ধানের উৎপাদন পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জক। অ্যাগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে একই ডিসিপ্লিনের শিক্ষক জয়ন্তী রায় ও আবদুল্লাহ আল-মামুন ধানের জাত উন্নয়নে কাজ করেন। নতুন জাতের ধানের সারিটি KUAT-1701 নামে মূল্যায়িত হচ্ছে। আগামী বছর যশোরের বিভিন্ন জায়গায় মাঠ পর্যায়ে সারিটি মূল্যায়ন করা হবে এবং পরে চূড়ান্তভাবে জাত নির্বাচনের জন্য আবেদন জানানো হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খুলনার উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, স্থানীয় জাতগুলোর উন্নয়নে কৃষক লাভবান হবেন। এতে কম সময়ে অধিক ধান পাওয়া যাবে। খুবির প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মো. মনিরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে চাষাধীন স্থানীয় জাতগুলো যদি যথাযথ মূল্যায়ন ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে অচিরেই চাষ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। স্থানীয় ধানের জাতগুলো হচ্ছে মূল্যবান জিনের ভান্ডার, যা  biotic, abiotic resistant এবং মূল্যবান ভিটামিন মিনারেল সমৃদ্ধ। এ কারণে অনুন্নত নানা জাতের ধান সংরক্ষণ উন্নতকরণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর