শনিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

’৯০-এর চেতনা বাস্তবায়ন করছেন শেখ হাসিনা

------ এস এম কামাল

’৯০-এর চেতনা বাস্তবায়ন করছেন শেখ হাসিনা

নব্বইয়ের ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও বর্তমানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেছেন, নব্বইয়ের যে চেতনা নিয়ে ছাত্ররা আন্দোলন শুরু করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, সেই লক্ষ্য সামনে রেখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। নব্বইয়ের চেতনা বাস্তবায়নে শেখ হাসিনা কাজ করছেন। বাংলাদেশ এখন অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, উন্নয়নশীল দেশ। শিক্ষা এখন গণমুখী, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। ছাত্র ও জনগণের চাওয়া-পাওয়াগুলো বাস্তবায়ন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

সাবেক ছাত্রনেতা এস এম কামাল হোসেন গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নব্বই সালে এরশাদবিরোধী যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তার সূত্রপাত ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর থেকেই। জিয়াউর রহমান যখন সামরিক শাসনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেছিলেন, গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছিলেন, ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিলেন তখন থেকে। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৮২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রথম আন্দোলনে নামে। ’৮৩ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারি জাফর, জয়নাল, মোজাম্মেল, দিপালি সাহা আত্মাহুতি দেন। তার মধ্য দিয়ে সামরিক  স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ছাত্রদের লড়াই শুরু হয়। চূড়ান্ত আন্দোলন হয় ১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর জিহাদের লাশকে সামনে রেখে। গড়ে তোলা হয় সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য। সেদিন ডাকসুসহ ২২টি ছাত্র সংগঠন যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছিল, আজকের প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাদদেশে ছুটে এসেছিলেন। জিহাদের লাশকে সামনে রেখে সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজকে দিকনির্দেশনা দেন এবং ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তারই ধারাবাহিকতায় সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য গড়ে ওঠে। ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার এরশাদ সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। সেদিন ছাত্রঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে ১০ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ডা. শহীদ মিলন, জিহাদের রক্তে লেখা অক্ষরে আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করা।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, কিন্তু ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর প্রথমই ছাত্রদের ১০ দফার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে। বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। গণতন্ত্র তো দূরের কথা, রাজাকারদের হাতে দেশের পতাকা তুলে দেয়। মানুষের ভোটের অধিকার জিয়া-এরশাদ স্টাইলে আবার হরণ করে। মাগুরা উপনির্বাচনে ব্যালট টেবিলের ওপর রেখে প্রকাশ্যে সিল মেরে গণতন্ত্রকে পেছন দিয়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। ঢাকায় মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ভোটের সময় কেন্দ্র দখলের নামে ৭ জনকে হত্যা করা হয়। তেজগাঁও, মিরপুরে ভোট কারচুপি করে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে। ছাত্র সমাজ যে কারণে জীবন দিয়েছিল। তিনি বলেন, ছাত্ররা সামরিক স্বৈরাচারকে বিদায় করে অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ে তুলতে চেয়েছিল, তাকে ধূলিসাৎ করেছে। ছাত্রদের একটি লক্ষ্যও বিএনপি বাস্তবায়ন করেনি। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে ছাত্রদের সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে লড়াই করে চলেছেন। মুক্তিযুুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন। যে লক্ষ্য ও স্বপ্ন ছিল শহীদদের, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ, তা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে আজকের বাংলাদেশ। দুর্নীতিমুক্ত, জঙ্গিবাদমুক্ত হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।

সর্বশেষ খবর