শনিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

যুক্তরাষ্ট্রে মিনিটে শতাধিক আক্রান্ত, বাড়ছে জার্মানি-আফ্রিকায়

প্রতিদিন ডেস্ক

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কায় বিপর্যস্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন মিনিটে শতাধিক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। পাশাপাশি এ ভাইরাসের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটছে জার্মানি ও দক্ষিণ আফ্রিকায়। ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাব অনুযায়ী, গতকাল সকাল পর্যন্ত বিশ্বে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছায় ১৫ লাখ ১৪ হাজারে। আর আক্রান্তের সংখ্যা হয় ৬ কোটি ৫৬ লাখ ২৫ হাজার ৫৮২। রয়টার্স জানিয়েছে, গত এক বছরে ভাইরাসের ২ লাখ ৭৯ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে আমেরিকায়। এখন মিনিটে সংক্রমণ বেড়ে হয়েছে শতাধিক। ভয়াবহতার শেষ এখানেই নয়। গত বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ ঘটে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৬৯৫ জনের। দৈনিক সংক্রমণ এখন ২ লাখের আশপাশেই থাকছে। নভেম্বরে প্রতি সপ্তাহে ১০ লাখ মানুষ নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ‘কভিড ট্র্যাকিং প্রজেক্ট’ নামে একটি পর্যবেক্ষক সংস্থা জানাচ্ছে, মিনিটে গড়ে ১০০ জনের বেশি করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। ওই সংস্থাই জানিয়েছে, এই মুহূর্তে আমেরিকার হাসপাতালগুলোতে মোট ১ লাখ ২২৬ জন করোনা-আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছেন। গত এক বছরে এ রকম পরিস্থিতি এই প্রথম। ক্যালিফর্নিয়া, টেক্সাস ও ফ্লোরিডা এই তিনটি প্রদেশের জনঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা এদের। প্রতিটি প্রদেশে ১০ লাখের বেশি করোনায় আক্রান্ত। লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে ভয়ানক বেড়েছে সংক্রমণ। মেয়র এরিক গারসেট্টি বৃহস্পতিবার একটি জরুরি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছেন, কোনো বাসিন্দা বাড়ি থেকে বেরোতে পারবেন না। বর্তমানে আমেরিকায় সংক্রমণের এপিসেন্টার লস অ্যাঞ্জেলেস। 

জার্মানিতে সংক্রমণের হার বাড়ছে : জার্মানিতে করোনায় সংক্রমণের হার ঠেকাতে নানা বিধিনিষেধ জারি করেও সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার রোধ করা যাচ্ছে না। তবে করোনায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা এখনো আয়ত্তের মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছে জার্মানি সরকার। ২৫ ডিসেম্বর আসন্ন বড়দিনকে কেন্দ্র যেসব বিধি জারি করা হয়েছে তা আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। জার্মানির সংক্রমণ রোগ বিষয়ের গবেষণা কেন্দ্র রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় জার্মানিতে নতুন করে ২৩ হাজার ৪৪৯ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন এবং ৪৩২ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এর আগে গত বুধবার সর্বোচ্চ ৪৮৭ জনের মৃত্যু ঘটছে। এই নিয়ে করোনার সংক্রমণে জার্মানিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৮ হাজার ২৬০। রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট আরও জানিয়েছে, শীতকালে করোনাভারাসের সংক্রমণ কেন এত আগ্রাসী হয়ে উঠছে, বিষয়টি নিয়ে তারা গবেষণা করছে। জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, জার্মানিতে জারি করা লকডাউন-ব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকর কি না, বিষয়টি নিয়ে আমাদের গভীরভাবে ভাবতে হবে। তা ছাড়া এভাবে আমরা পুরো জাতিকে সংশয়ের মধ্য রাখতে পারি না।

দক্ষিণ আফ্রিকায় সংক্রমণ বাড়ছে : দক্ষিণ আফ্রিকার কিছু অঞ্চলে করোনার সংক্রমণ বাড়তে দেখা যাচ্ছে।  প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা ইস্টার্ন কেপ প্রদেশে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইস্টার্ন কেপ প্রদেশে করোনা সংক্রমণের রেকর্ড ঘটেছে। এটি করোনা ছড়ানোর নতুন কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। তাই সেখানকার পূর্ব নেলসন ম্যান্ডেলা বে এলাকায় রাতের বেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে সৈকত এলাকায় প্রকাশ্যে অ্যালকোহল গ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বলেছেন, সৈকত এলাকায় মদ্যপান নিষিদ্ধ করায় সামাজিক সমাবেশ কমবে। দেশটিতে ইনডোরে আয়োজিত কোনো অনুষ্ঠানে অতিথি কমিয়ে ১০০, আর বাইরের কোনো অনুষ্ঠানে একসঙ্গে সর্বোচ্চ ২৫০ জন করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দেশটির জনগণের কাছে করোনার বিধিনিষেধ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন রামাফোসা।

দেশটিতে মোট করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৮ লাখ ৮৭২ জনের। এর মধ্যে ইস্টার্ন কেপ প্রদেশে শনাক্ত হয়েছে এক লাখ ৩২ হাজার ১৪৯ জনের।

সর্বশেষ খবর