শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সহযোগিতার মাধ্যমে আঞ্চলিক উন্নয়ন প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর

ভারতীয় হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সহযোগিতার মাধ্যমে আঞ্চলিক উন্নয়ন প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গতকাল সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আঞ্চলিক উন্নয়ন ও সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে পুনরায় বলেছেন, বাংলাদেশ ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ নীতি অনুসরণ করে। গতকাল নবনিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি বলেন, আমি আঞ্চলিক উন্নয়ন ও সহযোগিতায় বিশ্বাস করি।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার সাংবাদিকদের এ বিষয়ে অবহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধের পর দেশ গঠনে ভারতের অবদানের কথা স্মরণ করেন। সাক্ষাৎকালে ভারতীয় হাইকমিশনার ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া আঞ্চলিক কার্যালয় (এসইএআরও) বিষয়ে  বাংলাদেশের প্রার্থিতার প্রতি ভারত সরকারের সমর্থনের কথা জানান। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে বেক্সিমকোর কাছে কভিড-১৯ টিকার ৩ কোটি ডোজ সরবরাহের চলমান প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে দোরাইস্বামী জানান, টিকার কার্যকর সরবরাহের জন্য বাংলাদেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে তারা আগ্রহী। তিনি বাংলাদেশের খাদ্য ও কৃষি খাতে আরও ভারতীয় বিনিয়োগ আনার প্রস্তাব দেন। ভারতীয় হাইকমিশনার ব্যবসায়ী পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ানো নিয়ে কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় ভারত অংশীদার হতে আগ্রহী বলে উল্লেখ করেন দোরাইস্বামী। মহামারীতে বাংলাদেশিদের ভিসা পাওয়া নিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার জানান, বর্তমানে ভিসার ৯০ শতাংশ ক্যাটাগরি চালু রয়েছে এবং বাকিগুলোও মহামারী পরিস্থিতি বিবেচনা করে খুলে দেওয়া হবে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বাংলাদেশ-ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে আসন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন ভারতীয় হাইকমিশনার। তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ সব ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সব বাংলাদেশির জন্য শুভকামনা পোষণ করেন। দোরাইস্বামী সাক্ষাৎ দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী তাকে ধন্যবাদ দেন এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে শুভেচ্ছা জানান। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, আগামী ১৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মাঝে হতে যাওয়া ভার্চুয়াল সম্মেলনে চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেলপথসহ আরও কিছু প্রকল্প উদ্বোধন করা হবে।

বাংলাদেশে সুইস বিনিয়োগ বাড়াতে আহ্বান : এদিকে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ বাড়াতে সুইজারল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল গণভবনে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি কার্ড সৌজন্য সাক্ষাতে এলে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। পরে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার বৈঠকের বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। হাসান জাহিদ জানান, বাংলাদেশে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের একটা যুবসমাজ আছে, যারা কাজে অত্যন্ত দক্ষ। সুইজারল্যান্ড যদি এখানে আরও বেশি বিনিয়োগ করে, তবে উভয় দেশই লাভবান হবে। বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ, উদার বিনিয়োগ নীতি, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, অবকাঠামো সুবিধাসহ অন্যান্য সুযোগের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। বিনিয়োগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত হয়ে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত বলেন, এখানে আরও সুযোগ রয়েছে, আরও বিনিয়োগের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। মানব দক্ষতা উন্নয়নে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, দক্ষতা উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের আগ্রহ তারা লক্ষ্য করেছেন। এ ব্যাপারে তারা বাংলাদেশ সরকারকে সব রকম সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে। কভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সব রকম সহযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করে সুইস রাষ্ট্রদূত বলেন, কভিড-১৯ মোকাবিলায় সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে এবং বাংলাদেশকে যত রকম সহায়তা দেওয়া সম্ভব, তারা সে চেষ্টা করবে। বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করে সুইস রাষ্ট্রদূত বলেন, সংকটময় সময়ও বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে তিনি মুগ্ধ। করোনার কারণে তিনি বাংলাদেশ ঘুরে দেখতে পারেননি- জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘তিনি প্রথম সুযোগে বাংলাদেশের সৌন্দর্য ঘুরে দেখতে আগ্রহী। পদ্মা সেতু প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সম্পূর্ণ নিজের সামর্থ্যে পদ্মা ব্রিজ তৈরি করছে। এর ফলে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যে যোগাযোগ সৃষ্টি হবে, সেটা সরাসরি আমাদের জিডিপিতে অবদান রাখবে।

সর্বশেষ খবর