নাটোরের বাগাতিপাড়ায় রহিমানপুর গ্রামের কৃষক সাজেদুর রহমান নাগপুরী জাতের কমলালেবু চাষে সফল হয়েছেন। তিনি লিজ নেওয়া আড়াই বিঘা জমিতে নাগপুরী জাতের কমলালেবু চাষ করেছেন। উপজেলার জামনগর ইউনিয়নের রহিমানপুর গ্রামের পাশের মাঠে কৃষক সাজেদুর রহমানের নাগপুরী জাতের কমলালেবুর বাগান। সেখানে প্রতি গাছে অসংখ্য কমলা শোভা পাচ্ছে। কমলার ভারে গাছগুলো নুয়ে পড়েছে। প্রতিটি গাছে ১৫ থেকে ২০ কেজি কমলা শোভা পাচ্ছে। তার পরামর্শে এলাকার অনেক কৃষক নাগপুরী কমলালেবু চাষে উৎসাহী হয়েছেন।
সাজেদুর রহমান অক্টোবর মাসে কমলা বিক্রি শুরু করেছেন। আগামী জানুয়ারি মাস পর্যন্ত পুরোদমে কমলা বিক্রির আশা করছেন। চলতি মৌসুমে ৮০ থেকে ১০০ মণ কমলা বিক্রির স্বপ্ন দেখছেন। এ মৌসুমে তার দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। গত মৌসুমে তিনি ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকার কমলা বিক্রি করেছেন। আবদুলপুর থেকে আসা ফল ব্যবসায়ী মাসুদ রানা জানান, তিনি সপ্তাহে
দুই দিনে ৭ থেকে ৮ মণ কমলালেবু ক্রয় করেন। অপর ক্রেতা নাটোর স্টেশন বাজার এলাকার ফল ব্যবসায়ী সেন্টু জানান, এখানকার উৎপাদিত কমলার ওপরে সবুজ ও হলুদের মিশ্রণ এবং ভিতরে খানিকটা সাদাটে। তিনি এ বাগান থেকে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি ক্রয় করে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা লাভে বিক্রি করেন। সাজেদুর রহমান চার বছর আগে কমলালেবুর চাষ শুরু করেন। দিনাজপুর থেকে আনা আড়াইশ কমলার চারা দেড় বছরের মাথায় ফল দিতে শুরু করে। নাগপুরী কমলালেবু গাছ ১০ থেকে ১৫ বছর ফল দেয়। টক মিষ্টি উৎপাদিত কমলাকে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য এনে দিয়েছে। ইতিহাস ঐতিহ্যের নাটোরের পরিচিতিতে কমলা আরও এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী জানান, অর্গানিক কমলা উৎপাদন এবং প্রচারণার মাধ্যমে বাজার সম্প্রসারণে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। এ উপজেলায় মাল্টা চাষে সফলতার পাশপাশি নাগপুরী কমলা চাষেও ক্রমান্বয়ে সফলতা আসছে। বিভিন্ন অপ্রচলিত ফল ও ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠছে বাগাতিপাড়ার কৃষি। কমলা চাষের পরিধি বাড়াতে কৃষি বিভাগ সব রকমের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।