যুক্তরাষ্ট্রে করোনা প্রতিরোধক ভ্যাকসিন শুরু হয়েছে। তবে এখনো নেতিবাচক অবস্থান পরিবর্তন করেননি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল থেকে ফাইজারের করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগের আগেই তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, যত দিন তিনি হোয়াইট হাউস বা ক্ষমতায় থাকবেন তত দিন হোয়াইট হাউসের কাউকে ভ্যাকসিন নিতে দেবেন না। তিনি নিজেও নিতে চান না বলে গুঞ্জন রয়েছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নানা নেতিবাচক মন্তব্য করে ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছেন। নির্বাচনে তার পরাজয়ের পেছনে এটি একটি বড় কারণ। আর সেই ক্ষোভ থেকে এখনো ট্রাম্প সরে আসতে পারেননি। যে কারণে তিনি এখনই হোয়াইট হাউস কর্মীদের ভ্যাকসিন গ্রহণ না করার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি টুইটে বলেছেন, ‘এখনই নয়, হোয়াইট হাউস কর্মীদের আরও পরে ভ্যাকসিন দেওয়া হতে পারে।’ এদিকে রয়টার্স নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে গতকাল জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সসহ যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের নতুন অনুমোদন পাওয়া করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণের প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। সরকারি কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখার পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ভ্যাকসিন বিতরণ তদারকি করার দায়িত্বে থাকা জেনারেল গুস্তাভ পার্না জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের সব অঙ্গরাজ্যে ৩০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পৌঁছে যাবে। প্রথম দফায় হোয়াইট হাউস কর্মীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা আগে থেকেই ছিল। কিন্তু এই পরিকল্পনায় সায় দেননি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। খবরে বলা হয়, এ অবস্থায় গতকাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে। ৫০টি অঙ্গরাজ্যে প্রথম দফায় ৩০ লাখ ডোজ দেওয়া হবে। প্রথম দিকে স্বাস্থ্যকর্মী, বয়স্ক লোকজন এবং করোনার সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এরই মধ্যে আমেরিকার ১৪৫টি স্থানে ভ্যাকসিন পৌঁছে গেছে। জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন উলিয়ট জানান, কংগ্রেস, বিচার বিভাগ ও বিশেষ শাখাগুলোর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের পর্যায়ক্রমে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। মহামারীর মধ্যে সরকারের কার্যক্রম যেন নিরবচ্ছিন্ন থাকে তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। উলিয়ট আরও বলেন, ‘আমেরিকার জনগণের আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে যে, তারা যে নিরাপদ ও কার্যকর ভ্যাকসিনটি নিচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তারাও সেই একই ভ্যাকসিন নিচ্ছেন।’ প্রসঙ্গত, গত অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও করোনায় আক্রান্ত হন। সে সময় তিন দিন হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখনই ভ্যাকসিন নেবেন কি না- সে বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়। যদিও বলছেন, সঠিক সময়েই তিনি ভ্যাকসিন নেবেন।