বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আলেমদের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আলেমদের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব। সরকার কখনই নতজানু নীতিতে বিশ্বাস করে না। ফেসবুকে যেসব উসকানি চলছে সেগুলো নিয়ে আমাদের সজাগ হতে বলেছেন তারাই। কেউ যেন কোনো প্রকার নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে, আলেমসমাজ সে ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ। তারা বলেছেন কোনোরকম আন্দোলন তারা করবেন না। তাদের দাবির মধ্যে যদি সংবিধানবিরোধী কোনো কিছু থাকে তাহলে সেগুলো মানার সুযোগ নেই। আমরা সংবিধানের বাইরে যাব না। আবার কারও ধর্মীয় সেন্টিমেন্টেও আঘাত করব না। নতজানু রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে না। গতকাল সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা কোনো ধর্মকে অবজ্ঞা করব না। আমরা ধর্মীয় সংস্কৃতি ও বিধান মেনে চলছি এবং চলব। আমাদের প্রধানমন্ত্রী একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান। তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাসময়ে আদায় করেন এবং তাহাজ্জুদ নামাজও আদায় করেন। তারাও বিশ্বাস করেন তাদের দাবিগুলো আলোচনার মাধ্যমে শেষ হবে। মন্ত্রী বলেন, সোমবার রাতে তার ধানমন্ডির বাসভবনে মাওলানা মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে ১২ জন আলেমের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় ফলপ্রসূ হয়েছে। ওই বৈঠকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও ধর্ম সচিব উপস্থিত ছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৫ ডিসেম্বর মাওলানা মাহমুদুল হাসানের ডাকে আলেমরা একত্রিত হয়েছিলেন। সেখানে তারা বিস্তারিত আলাপ করেন। দেশের বর্তমান অবস্থাসহ অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। তাদের করণীয় বিষয়েও আলোচনা করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি দেন। সে চিঠির কপি আমাদের দেওয়া হয়েছে। সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার জন্যই সোমবার রাতে আমরা বৈঠকে বসি। একটা ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এগুলো নিয়ে আরও আলোচনা হবে। আমরা মনে করি এ আলোচনার মাধ্যমেই আমরা সব বিষয়ের সমাধান করতে পারব। আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তারাও স্বীকার করেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী তিনি একজন খাঁটি মুসলমান। তিনি তার ইমানি দায়িত্বগুলো পালন করে যাচ্ছেন। সোমবার রাতে আলোচনায় এটুকু সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, আমরা আরও আলোচনার মাধ্যমে বিষয়গুলো শেষ করতে পারব। মন্ত্রী বলেন, আলাপ-আলোচনা যা শুরু হয়েছে তা চলবে। কারণ, আলোচনার একটা সুন্দর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তারা এ আবেদন রেখেছেন, কেউ যেন রাস্তায় নেমে ভাঙচুর না করে। কেউ যেন রাস্তায় এসে শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে। এ বিষয়ে তারা আমাদের সঙ্গে ঐকমত্যে এসেছেন। ফেসবুকে নানা ধরনের উত্তেজনা ছড়ানোর যে প্রয়াস চলছে, তার বিরুদ্ধে তারাও কথা বলেছেন। তারা বলেছেন এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে। আমি সেটাই বলছিলাম যে অনেক বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। কেউ যেন সরকারবিরোধী আন্দোলন না করে, সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

মুজিব মিনার তৈরিসহ চিঠিতে তাদের পাঁচটি প্রস্তাব ছিল। সেগুলো তারা আলোচনার মাধ্যমেই শেষ করতে চান। আশা করি আলোচনার মাধ্যমেই ফয়সালা করতে পারব। তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট বলেছি কোনো কিছুতেই আমরা সংবিধানের বাইরে যাব না। কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেব না। ভাস্কর্য যেখানে যেভাবে আছে সেগুলো থাকবে কি থাকবে না, সব বিষয় নিয়েই আমরা আলোচনা করব। ভাস্কর্য কেন করা হয়। এটাকে পূজা করা হয় না। আমরা এও বলেছি নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুকে ধরে রাখতে চাচ্ছি। আমরা আমাদের লাইনে কথা বলেছি। তারা ধর্মের লাইনে কথা বলেছেন। সব বিষয়েই আমরা সুন্দর সমাধানে আসতে পারব বলে বিশ্বাস করি। মাওলানা মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে দেশের ১২ জন শীর্ষস্থানীয় আলেম সোমবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসভবনে গিয়েছিলেন। সেখানে উভয় পক্ষের মতবিনিময় হয়।

সর্বশেষ খবর