বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

সুদর্শন পাখি মোহনচূড়া

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

সুদর্শন পাখি মোহনচূড়া

মোহনচূড়া পাখি শুধু নামেই নয়, দেখতেও খুব সুন্দর। এক পলক পড়লেই এ পাখির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হবেন যে কেউ। মাথার ওপরে ঝুঁটি থাকায় পাখিটিকে মোহনচূড়া নামে ডাকা হয়। ইংরেজি Common Hoopoe আর বৈজ্ঞানিক নাম Upupa epops. আমাদের দেশে পাখিটি ‘হুপো’ নামেও পরিচিত। এ পাখি বিষয়ে আল কোরআনের সুরা নামলের ২০-২২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘একটি হুদহুদ পাখি নবী সুলাইমানের পোষা ছিল এবং এর কাজ ছিল বিভিন্ন স্থান থেকে খবরাখবর সংগ্রহ করে নবীকে জানানো।’ হয়তো এ জন্য অনেকের কাছে এটি সুলেমানি পাখি নামে পরিচিত। আর প্রাচীন পারস্যে এ পাখিকে সততার প্রতীক হিসেবে দেখা হতো। সম্প্রতি চট্টগ্রামের অনন্যা আবাসিক এলাকা থেকে ইতিহাসের পাতায় স্থান নেওয়া সুন্দর এ পাখির ছবি তুলেছেন শৌখিন ফটোগ্রাফার রাশেদ। বাংলাদেশ ছাড়াও এশিয়া, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ পাখি দেখা যায়। পাখিবিশারদরা জানান, হুদহুদ পাখি ২৫ থেকে ৩২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। তবে তাদের পাখা দুটি ছড়িয়ে দিলে ৪৪ থেকে ৪৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বিস্তৃস্ত হয়। এদের শরীরের রং বাদামি। ডানা ও লেজে সাদা-কালো দাগ রয়েছে। ঠোঁট লম্বা ও কিছুটা বাঁকা। ঠোঁটের রং কালচে। মাথায় ঝুঁটি। হলদে বাদামি পালকের মাথাটা কালো রঙের। এরা উত্তেজিত হলে ঝুঁটি প্রসারিত করে। এতে তাদের সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায়। গ্রামের ঘরবাড়ির আঙিনায় এদের দেখা মেলে। এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন কীটপতঙ্গ, কেঁচো, ফল। এরা মাঠের গর্তে, উইপোকার বাসায় লম্বা ঠোঁট ঢুকিয়ে পোকামাকড় বের করে খায়। এ পাখিটির প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে জুন। এরা বাসা বাঁধে গাছের কোটরে, পুরনো দেয়ালের ফাঁকফোকরে। ডিম দেয় চার থেকে পাঁচটি। গোলাকার ডিমের রং সাদা। স্ত্রী পাখি ১৮ থেকে ২০ দিন ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল এইচ খান বলেন, ‘মোহনচূড়া খুব উপকারী পাখি।

 এরা পোকামাকড় খেয়ে আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। দেখতে খুব সুন্দর, মাথার টুপুর ছড়ালে আরও সুন্দর দেখায়। এরা আমাদের দেশে স্থায়ী পাখি। তবে সব পাখি দেশে প্রজনন করে না। প্রজনন সময়ে কিছু পাখি পরিযায়ী হয়ে অন্য দেশে চলে যায়।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর