সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সংক্রমণ হারে অস্বাভাবিক উত্থান-পতন

২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ১১৫৩, মৃত্যু ৩৮

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংক্রমণ হারে অস্বাভাবিক উত্থান-পতন

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হারে এক সপ্তাহ ধরে অস্বাভাবিক উত্থান-পতন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। টানা কয়েক দিন সংক্রমণ নিম্নমুখী থাকার পর দিনের ব্যবধানে ফের ১ শতাংশের বেশি বেড়ে যাচ্ছে। পরদিনই আবার কমে যাচ্ছে দেড় শতাংশের বেশি। এতে ধারণা করা হচ্ছে, কিছু কিছু এলাকায় এখনো করোনা সংক্রমণের উচ্চ হার বিরাজ করছে। ওইসব এলাকায় নমুনা পরীক্ষা বাড়লেই বেড়ে যাচ্ছে গড় সংক্রমণ হার। এদিকে দেশে করোনা সংক্রমণের নয় মাস ১২ দিনের মাথায় গতকাল শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫ লাখ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১৪ ডিসেম্বর দেশে সংক্রমণ হার ছিল ১০ দশমিক ৬৯ শতাংশ। পরের তিন দিন ধারাবাহিকভাবে এ হার কমে। ১৫ ডিসেম্বর ছিল ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ, ১৬ ডিসেম্বর ৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ ও ১৭ ডিসেম্বর ছিল ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ, যা ছিল বিগত আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। ১৮ ডিসেম্বর ফের তা বেড়ে হয় ৯ দশমিক ১৯ শতাংশ, ১৯ ডিসেম্বর ১ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়ে হয় ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ। একদিনের ব্যবধানে গতকাল আবার ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ কমে সংক্রমণ হার দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশে। দেশে ৮ শতাংশের নিচে সংক্রমণ হার ছিল গত ১১ এপ্রিল।

এ ব্যাপারে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অ্যান্টিজেন পরীক্ষাগার বেড়েছে। এই টেস্টের সঠিকতা কম। অনেক সময় কম লক্ষণযুক্ত করোনা রোগীর অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসে। পরে পিসিআর টেস্টে পজিটিভ আসে। এটার একটা প্রভাব শনাক্ত হারে পড়তে পারে। এ ছাড়া যেসব এলাকায় এখনো উচ্চ সংক্রমণ হার রয়েছে, সেখানে নমুনা পরীক্ষা বাড়লে শনাক্ত হারও বাড়তে পারে। কী কারণে এমন উত্থান-পতন হচ্ছে তা বুঝতে তথ্য বিশ্লেষণ করতে হবে। সংক্রমণ কমাতে স্বাস্থ্যবিধিতে কড়াকড়ি আরোপ করা জরুরি। মাঝে কিছু দিন মাস্ক পরায় কড়াকড়ি আরোপ করায় সংক্রমণ কমে এসেছিল।

এদিকে গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ হার কমলেও বেড়ে গেছে মৃত্যু। এ সময়ে করোনায় মারা গেছেন ৩৮ জন, যা আগের ২৪ ঘণ্টায় ছিল ২৫ জন। একদিনের ব্যবধানে ১৩ জন বেশি মারা গেছেন। বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুযায়ী, দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ৭ হাজার ২৮০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৩১৬টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ১ হাজার ১৫৩ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৭১৩ জনে। গত একদিনে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯২৬ জন। গতকাল পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৭ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩৮ জনের মধ্যে ৩০ জন ছিলেন পুরুষ ও আটজন নারী। সবারই মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। বয়স বিবেচনায় মৃতদের মধ্যে ২২ জন ছিলেন ষাটোর্ধ্ব, নয়জন পঞ্চাশোর্ধ্ব, চারজন চল্লিশোর্ধ্ব, একজন ত্রিশোর্ধ্ব, একজন বিশোর্ধ্ব ও একজনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম। এর মধ্যে ২২ জন ঢাকা, আটজন চট্টগ্রাম, তিনজন সিলেট, দুজন রাজশাহী এবং একজন করে বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় ও ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

সর্বশেষ খবর