শিরোনাম
বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সব ভণ্ডুল হয়েছে, ক্ষুদ্ররা পুঁজি হারিয়েছেন

-আবদুল মাতলুব আহমাদ

সব ভণ্ডুল হয়েছে, ক্ষুদ্ররা পুঁজি হারিয়েছেন

বিদায়ী ২০২০ সালের শুরুটায় হালকা মন্দা থাকলেও করোনা মহামারীতে সবকিছু ভ-ুল হয়ে গেছে বলে মনে করেন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ। তিনি বলেছেন, ‘এই সময়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেকে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। সারা দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নেমেছে। যদিও আমরা আশা করেছিলাম, মুজিববর্ষে অর্থনৈতিকভাবে ভালো অবস্থানের দিকে যাবে দেশ। ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষণও ছিল। কিন্তু সে আশার গুড়ে বালি দিয়েছে করোনাভাইরাস।’ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ। নিটল-নিলয় গ্রুপের এই চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগে যেখানে সক্ষমতা ছিল ১০০ ভাগ, সেটি এখন ৭০ ভাগে নেমেছে। ৩০ শতাংশ সক্ষমতা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। এটাই করোনার বাস্তবতা। আরেক বাস্তবতা হলো, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। ছোট আর বড় যে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কথাই বলা হোক না কেন, তাদের বাজার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (আইবিসিসিআই) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বলেন, ‘করোনার সংকট থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনের বাংলাদেশে কৃষি, স্বাস্থ্য এবং আত্মকর্মসংস্থানের ওপর নজর দিতে হবে। আমাদের রিজার্ভ ভালো থাকায় করোনা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, এ দেশের ৭০ শতাংশ তরুণ। বাকিরা প্রবীণ। এই প্রবীণদের পক্ষে বাড়িতে বসে অফিস করে ব্যবসা-বাণিজ্য সচল করা সম্ভব নয়। তাই তরুণদের প্রতি বাড়তি নজর দিতে হবে।’ তাঁর মতে, ‘করোনাকালে বড় ব্যবসায়ীরা ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারছেন না। আবার ছোটরা টিকে থাকার লড়াই করছেন। প্রধানমন্ত্রী-ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ ও ক্ষণে ক্ষণে দেওয়া নির্দেশনায় ব্যবসায়ীরা টিকে গেছেন। এর পরও সরকারের কাছে অনুরোধ, যারা ছোট ছোট ব্যবসা করেন, তাদের সহজে ঋণ দিন।’

আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘করোনা নিয়ন্ত্রণে রেখেই বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল করতে হবে। গ্রামে অর্থনীতি স্বাভাবিক হচ্ছে। সব মিলিয়ে অচিরেই আগের অবস্থায় ফিরবে বাংলাদেশের অর্থনীতি। মহামারী করোনাভাইরাসের বড় আঘাত আসে পরিবহন খাতে। তবে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় করোনাকালের ৬০ শতাংশ সংকট কেটেছে। আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতি খুব দ্রুত স্বাভাবিক হচ্ছে। আমরা তিন মাস আগেও কল্পনা করিনি যে দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকশিল্প ঘুরে দাঁড়াবে। আমাদের রেমিট্যান্স বাড়ছে। প্রবাসীরা বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাচ্ছেন। অর্থনীতির গতি বাড়ছে। সব মিলিয়ে আগামী বছরের মাঝামাঝি বাংলাদেশের অর্থনীতি আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।’ অভিজ্ঞ এই ব্যবসায়ী বলেন, করোনাকালে সরকার-ঘোষিত প্রণোদনার অর্থ নতুন উদ্যোক্তারা পাচ্ছেন না। ফলে পুরনো উদ্যোক্তারা ঋণ পাচ্ছেন। নতুনরা ব্যাংকগুলো থেকে কোনো সহযোগিতা বা সহায়তা পাচ্ছেন না। করোনাকালে ঘরে ঘরে যে উদ্যোক্তা সৃষ্টি হচ্ছে, তাদের উদ্যমী শক্তি কাজে লাগিয়ে আগামী দিনের অর্থনৈতিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকার, ব্যাংক ও ব্যবসায়ীদের সম্মিলিত সহায়তা লাগবে। মনে রাখতে হবে, করোনা নিয়ন্ত্রণে রেখেই অর্থনীতি আগের অবস্থায় নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারি সহায়তার বিকল্প নেই।

সর্বশেষ খবর