বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সর্বস্ব লুট, প্রবাসীর মৃত্যু, গ্রেফতার ২

নিজস্ব প্রতিবেদক

হকার সেজে টার্গেট করা হয় যাত্রীদের। চেতনানাশক মেশানো খাবার খাইয়ে অজ্ঞান করে হাতিয়ে নেওয়া হয় সর্বস্ব। রাজধানীর বাসে অজ্ঞান পার্টির হাতে এভাবে প্রাণ যায় প্রবাসী আবুল হোসেন গাজীর। অজ্ঞান পার্টির দুজনকে গ্রেফতারের পর সংঘবদ্ধ এমন অপরাধের কথা জানিয়েছে পিবিআই। গ্রেফতার দুজন হলেন মো. জাকির হোসেন ও মো. জিয়া। গত সোমবার বরিশাল, ঝালকাঠি ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে আবুল হোসেন গাজীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়। পিবিআই বলেছে, ছিনতাইয়ে খুন করতেও দ্বিধা করছে না এ অপরাধীরা। পুরো চক্রকে ধরতে অভিযান চলছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর বনশ্রীতে এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (দক্ষিণ) অতিরিক্ত এসপি মো. সারোয়ার জাহান বলেন, ২৯ নভেম্বর মুগদায় মায়ের সঙ্গে দেখা করতে মিরপুর থেকে ট্রান্স সিলভা পরিবহনে ওঠেন বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা প্রবাসী আবুল হোসেন গাজী। বাসে হকারের কাছ থেকে জুস কিনে খান। বুঝতেই পারেননি জুসেই ছিল অজ্ঞান পার্টির মেশানো ঘুমের ওষুধ। পরে মোবাইল ফোনসহ তার সর্বস্ব লুট করা হয়। এরপর যাত্রাবাড়ী থানার বাগানবাড়ী থেকে আবুল হোসেন গাজীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। চিকিৎসকরা জানান, অতিরিক্ত মাত্রার চেতনানাশক ওষুধ সেবনে ৬০ বছর বয়সী আবুল হোসেন গাজীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় তার মেয়ে মোসা. জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন। থানার পর মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইর কাছে ন্যস্ত করা হয়। পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (দক্ষিণ) এসআই নাজিম উদ্দিন মামলার তদন্তভার পান। তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জাকির ও জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার রহস্য বেরিয়ে আসে। পিবিআই কর্মকর্তা সারোয়ার বলেন, গ্রেফতার অজ্ঞান পার্টির এ চক্রটি পুরানা পল্টনে অলিম্পিয়া মেডিকেল স্টোর নামক একটি ফার্মেসি থেকে নেশাজাতীয় ট্যাবলেট কেনে। তারা জুসের ভিতর মিশিয়ে যাত্রীবাহী বাসে বিক্রির উদ্দেশ্যে ওঠে। এরপর যাত্রীদের কাছে নেশাজাতীয় ট্যাবলেট মিশ্রিত জুস বিক্রি করে। পরে তার বর্ণনা দিয়ে পরবর্তী বাসস্ট্যান্ডে থাকা সহযোগীদের অবহিত করলে তারা নির্দিষ্ট বাসে ওঠে। তথ্যমতে বর্ণিত যাত্রীর অবস্থানে যায়। জুস খেয়ে যাত্রী অচেতন হয়ে পড়লে কাছে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নিয়ে যাত্রীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে বাস থেকে নেমে যায়।

সর্বশেষ খবর