শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

অমর্ত্য সেনের বাড়ি ‘প্রতীচী’র অবৈধ দখলে ১৩ শতক জমি

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

অমর্ত্য সেনের বাড়ি ‘প্রতীচী’র অবৈধ দখলে ১৩ শতক জমি

পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার শান্তিনিকেতনে রয়েছে ‘প্রতীচী’ নামে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের একটি বাড়ি। রাজ্য সরকারকে এক চিঠিতে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, এই বাড়ির জমির সঙ্গে অতিরিক্ত ১৩ শতাংশ জমি অবৈধভাবে দখল করে রাখা হয়েছে। বিশ্বভারতীর এই আচরণে ক্ষুব্ধ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, সারা বিশ্ব অমর্ত্য সেনকে সম্মান করে। নোবেল সম্মাননা এনে তিনি বাংলার গর্বকে বিশ্ব শিখরে নিয়ে গেছেন। এই অমর্ত্য সেন শান্তিনিকেতনের জমি দখল করে রাখবেন? মমতা বলেন, প্রায় ৭০-৮০ বছরে ধরে তাঁর পরিবার এখানে আছে। অমর্ত্য সেন কেন বিশ্বভারতীর জমি দখল করতে যাবেন? আসলে অমর্ত্য সেন আদর্শগতভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে- তাই তাঁর বিরুদ্ধে এমন চক্রান্ত। বলা হচ্ছে তিনি জমি দখল করে আছেন, হকার বসিয়েছেন। তাঁর প্রতীচী বাড়ি নিয়ে যার যা ইচ্ছা বলে যাবে- তা বাংলার মানুষ সহ্য করবে না। আমি বাংলার মানুষের হয়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। রাজ্য সরকারকে লেখা চিঠিতে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, যারা জমির প্লট বরাদ্দ পেয়েছিলেন তার মধ্যে অন্তত ডজন খানেক প্লট অবৈধভাবে ব্যক্তিগত নামে লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে আছে অমর্ত্য সেনের জমিটিও।

বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, অমর্ত্য সেনের প্রয়াত পিতাকে আইনিভাবে ১২৫ শতাংশ জমি দেওয়া হয়েছিল কিন্তু এর পাশাপাশি অতিরিক্ত ১৩ শতাংশ জমি অবৈধভাবে তাঁর দখলে আছে। অমর্ত্য সেন বলেন, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ক্যাম্পাসে ইজারা (লিজ) দেওয়া জমির অননুমোদিত দখল অপসারণের প্রক্রিয়াতে ব্যস্ত এবং আমাকেও দখল তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে। বিশ্বভারতীর জমির যে জায়গায় আমাদের বাড়িটি আছে সেটি একটি দীর্ঘকালীন ইজারায় (লিজ) দেওয়া হয়েছে। সেটা এখনো সমাপ্ত হওয়ার সময় আসেনি। কিন্তু উপাচার্য সব সময়ই কাউকে না কাউকে জমি থেকে উৎখাতের স্বপ্ন দেখে আসছেন। বিশ্বভারতী এস্টেট অফিসের অভিমত, জমির ভুল রেকর্ড ১৯৮০-১৯৯০ এর শতকে করা হয়েছিল। এই প্লটগুলোর বেশিরভাগই শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লি অঞ্চলে অবস্থিত- যা আশ্রমবাসী এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আবাসিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। জানা গেছে, ২০০৬ সালে অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে আর্জি জানান যে, ৯৯ বছরের জন্য ইজারা (লিজ) দেওয়া জমিটি যেন তাঁর নিজের নামে হস্তান্তর করে দেওয়া হয় এবং বিশ্বভারতীর এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে তাতে অনুমোদনও দেওয়া হয় কিন্তু অতিরিক্ত জমিটি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে আর ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। সূত্র জানায়, ১১৩২ একর জমির ওপর রয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে ৭৭ একর জমি জবরদখলকৃত হয়ে রয়েছে। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়া ও উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে সম্প্রতি ২২ একর জমি পুনরুদ্ধার করতে পারলেও বাকিটা এখনো উদ্ধার করা যায়নি।

সর্বশেষ খবর