রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

বগুড়ায় আট বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যায় চারজন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার ধুনটে আট বছরের শিশু তাবাসসুমকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ওয়াজ মাহফিলের ভলান্টিয়ারের দায়িত্বও পালন করেছে হত্যাকারীরা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপরাধের কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। পূর্বশত্রুতার জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে বগুড়া পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো- বগুড়ার ধুনট উপজেলার নশরতপুর গ্রামের তোজাম্মেল হকের ছেলে কলেজছাত্র বাপ্পী আহম্মেদ (২২), দলিল উদ্দিন তালুকদারের ছেলে মুদিদোকানদার কামাল পাশা (৩৫), সানোয়ার হোসেনের ছেলে রাজমিস্ত্রি শামীম রেজা (২২) এবং সাহেব আলীর ছেলে রংমিস্ত্রি লাবলু শেখ (২১)। গতকাল নিজ সভাকক্ষে ব্রিফিংকালে পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতার বাপ্পীর পরিবারের সঙ্গে শিশু তাবাসসুমের বাবার পরিবারের দ্বন্দ্ব ছিল। ঘটনার তিন মাস আগে বাপ্পী শিশু তাবাসসুমকে হত্যা করে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন ১৪ নভেম্বর বাপ্পীসহ গ্রেফতার ব্যক্তিরা তাবাসসুমকে ধর্ষণ করে হত্যার পরিকল্পনা করে। ওই দিন তাবাসসুম (৮) দাদা-দাদি ও দুই ফুফুর সঙ্গে নশরতপুর গ্রামে ওয়াজ মাহফিলে যায়। ওয়াজ মাহফিল চলাকালে সে পাশের দোকানে বেলুন কিনতে যায় অন্য শিশুদের সঙ্গে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাপ্পী রাত ৯টায় বাদাম কিনে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তাবাসসুমকে ফুসলিয়ে হাজী কাজেম জুবেদা টেকনিক্যাল কলেজে নিয়ে যায়। সেখানে বাপ্পী, কামাল পাশা, শামীম রেজা ও লাবলু শেখ শিশু তাবাসসুমকে মুখ চেপে ধরে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাবাসসুমকে বাপ্পী গলা টিপে হত্যা করে এবং কাটিং প্লাস দিয়ে হাতের আঙুল তুলে ফেলে, যেন সবাই মনে করে কোনো জন্তুর কামড়ে সে মৃত্যুবরণ করেছে। পরে বাপ্পী শিশুটির লাশ কাঁধে করে বাদশার বাঁশঝাড়ে ফেলে রেখে যায়, যাতে বাদশার ছেলে রাতুলকে সবাই সন্দেহ করে। এরপর বাপ্পী চলে যায় এবং বাকি তিনজন ওয়াজ মাহফিলে ভলান্টিয়ারের দায়িত্ব পালন করে। এদিকে লাশ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা করেন তাবাসসুমের বাবা বেলাল হোসেন খোকন। ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামিদের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান জানান, গ্রেফতার ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে। তাদের আদালতে হাজির করে ৮ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।

সর্বশেষ খবর