সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

বিদ্যালয়জুড়েই সবুজের ছায়া

শেখ সফিউদ্দিন জিন্নাহ

বিদ্যালয়জুড়েই সবুজের ছায়া

‘নির্মল বায়ু, দীর্ঘ আয়ু’ এ বিশ্বাসকে লালন করে গাজীপুরের শ্রীপুরে হাজী আবদুল কাদের প্রধান উচ্চ বিদ্যালয়কে গ্রিন ক্যাম্পাসে পরিণত করেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। করোনাকালে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় তেমন কোনো কাজ ছিল না শিক্ষকদের, এ সুযোগ ও মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর বৃক্ষরোপণের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সবুজ ক্যাম্পাস গড়ে তোলেন তারা। বিদ্যালয়জুড়েই এখন সবুজের সমারোহ। দেশি বিদেশি ফুল, ফল ও ঔষধি উদ্ভিদে পরিপূর্ণ এ বিদ্যালয়ের ছাদবাগানের নজর এখন সবার দৃষ্টিজুড়েই। জেলার   শ্রীপুর উপজেলার হায়াতখার চালা গ্রামে এই বিদ্যালয়টি ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ৬৭৩ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে এ বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভাষ্য মতে, তারা যখন ব্যাপকভাবে মুজিববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সে সময় করোনার কারণে বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ হয়ে যায়। তবে প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে একদল উদ্যমী শিক্ষক সে সময় থেকে শুরু করেন গ্রিন ক্যাম্পাস গড়ে তোলার কাজ। বিদ্যালয়ের চারপাশের কিছু জায়গা বাদে অন্য কোনো জায়গা না থাকায় বিদ্যালয়ের একতলা ভবনের প্রায় ৪ হাজার বর্গফুটের ছাদে বাগান গড়ে তোলেন। আম, জামরুল, আনার, আতাফল, আলুবোখারা, আপেল, রামবুটান, কদবেল, সফেদা, বেলি, বেল, কমলা, ত্বীনফল, জামরুল, তেঁতুল, মালবেরি, লটকন, সুইট লেমন, করমচা, ড্রাগন, স্ট্রবেরি, পেয়ারা, পারসিমন, পেপিনোমেলন, জাম্বুরা, কমলা,  মাল্টা, করছুল, কাঁঠাল, লেবু, আমড়া, গোলাপ, গাঁদা, কসমস, হুরহুরিয়া, স্টার,  রজনীগন্ধা, হাইড্রেনজিয়া, সিজিয়াম,  বলকামিনী, পাতাবাহার, রঙ্গন, মাধবীলতা, জবা, টমেটো, জাম, বেগুন, শিম, বরবটি, গাজর, ক্যাপসিকামসহ ৭৫ প্রজাতির প্রায় হাজারের ওপর উদ্ভিদের সমারোহ এখন এই ছাদ বাগানে। এসব উদ্ভিদের মধ্যে দেশি-বিদেশিসহ অধিকাংশই রয়েছে বিপন্ন তালিকায়। দেশি-বিদেশি এসব উদ্ভিদ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন। ভবিষ্যতে এই বিদ্যালয় থেকে উৎপাদিত বিভিন্ন উদ্ভিদের চারা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে বলে জানান প্রধান শিক্ষক।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা পুরো ক্যাম্পাসটিকেই সবুজে পরিপূূর্ণ করতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। আমাদের অন্যতম লক্ষ্য ডিজিটাল গ্রিন ক্যাম্পাস গড়ে তোলা। যাতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা নির্মল বায়ু পেতে পারে। এ ছাড়া গ্রিন ক্যাম্পাসের ছাদবাগান উদ্ভিদ শিক্ষার্থীদের শিক্ষার একটি বিষয় হবে। তারা ছোট বয়সেই এসব উদ্ভিদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠবে। মূলত আমাদের পুরো আয়োজনটা শিক্ষার্থীদের ঘিরেই। গাজীপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা বলেন, জেলায় এ বিদ্যালয়টি একটি মডেল। বিভিন্ন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে তাদের স্কুল ক্যাম্পাসকে গ্রিন ক্যাম্পাসে রূপান্তরিত করতে পারেন। আমি বেশ কয়েকবার বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে মুগ্ধ হয়েছি।

 

সর্বশেষ খবর