শনিবার, ২ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

মীর কাসেমের পাচারকৃত টাকা উদ্ধারে বাইডেন কি সাড়া দেবেন?

যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি

আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি হওয়া জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর পাচারকৃত টাকা বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিতে জো বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের পর আইনি প্রক্রিয়ার পুরোটাই অনুসৃত হবে। এমন নিশ্চয়তা দিয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ মার্কিন প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতিবিদরা। ঘাতক মীর কাসেমের অর্থ ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের তথ্য গণমাধ্যমে এলেও গত ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ  দূতাবাসের কেউ তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে পারেননি। প্রবাসীরা মনে করেন, দেশের স্বার্থে মার্কিন প্রশাসনকে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে নিযুক্ত লবিং ফার্মকেও এ ব্যাপারে কাজে লাগানো সম্ভব। ফার্র্মকে ওয়াশিংটন দূতাবাস কীভাবে কাজে লাগাচ্ছে সেটি দৃশ্যমান না হলেও ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনের আমলে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা হারিয়েছে। মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ ফান্ডেও তালিকা থেকেও বাংলাদেশের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। বাংলাদেশে বিদ্যমান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকেও মাঝেমধ্যেই মার্কিন কংগ্রেস থেকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মতো মন্তব্য/বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এমনকি বঙ্গবন্ধুর ঘাতক হিসেবে দন্ডিত রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে নিতেও ট্রাম্পকে দরখাস্ত হস্তান্তর করতে হয় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে। এ জন্যই সচেতন প্রবাসীরা ওই ফার্মকে ভাড়া করা নিয়েও প্রশ্নের অবতারণা করছেন। তবে মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন সাড়ে ছয় বছর পর ৩১ ডিসেম্বর দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ায় কমিউনিটি, বিশেষ করে আওয়ামী পরিবারে স্বস্তি এসেছে। কারণ, তারাও সাড়ে ছয় বছর ধরে অবজ্ঞা-অবহেলার শিকার হয়েছেন। দূতাবাসকে কমিউনিটি থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন করার মতো অবস্থা হয়েছে। নয়া রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলাম ৮ জানুয়ারিতে যোগদান করবেন। তখন থেকে বঙ্গবন্ধুর দন্ডিত ঘাতক রাশেদ চৌধুরী, একাত্তরের দন্ডিত ঘাতক আশরাফুজ্জামান খানসহ ঘাতক মীর কাসেমের পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে নিতে সম্মিলিত এবং কার্যকর একটি প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে আশা করছেন প্রবাসীরা।

জো বাইডেন টিমে পদস্থ এক কর্মকর্তা, যিনি বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে মনোযোগী, নাম গোপন রাখার শর্তে বুধবার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আইনের শাসনের স্বার্থে সবকিছু করতে বদ্ধপরিকর বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। বাংলাদেশ থেকে কেউ যদি টাকা পাচার করে থাকেন এবং বাংলাদেশের বিচারে দন্ডিত কেউ যদি যুক্তরাষ্ট্রে ঘাপটি মেরে থাকেন, তাহলে সেসব তথ্য বাইডেন প্রশাসনকে অবহিত করলে অবশ্যই আন্তরিক সাড়া মিলবে। তবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার লেশ পাওয়া গেলে সেই অনুরোধ হিতে-বিপরীত হতে পারে। সবকিছু বিবেচনায় রেখেই এগোতে হবে।’  এক্ষেত্রে নিউইয়র্কে বসবাসরত মীর কাসেমের ভাই মীর মাসুম আলীর সহযোগিতা নেওয়ার কথাও বলেছেন প্রবাসীরা। কারণ, মীর মাসুম আলীর মাধ্যমেই যুদ্ধাপরাধ বিচারে বিঘ্ন সৃষ্টির নানা পথে এগিয়েছেন মীর কাসেম আলী ব্রিফকেস ভর্তি ডলার নিয়ে। সে সময় ঢাকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিও মীর কাসেমের ডলারের বাহক হিসেবে নিউইয়র্কে আবির্ভূত হয়েছেন বলে কমিউনিটিতে জোর গুঞ্জন উঠেছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর