সোমবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন আর নেই

একুশে পদকপ্রাপ্ত স্বনামখ্যাত কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন আর নেই। গতকাল বিকালে ঢাকায় বনানীর নিজ বাসায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। রাবেয়া খাতুনের মৃত্যুতে শিল্প-সাহিত্য অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিশিষ্ট এই সাহিত্যিকের মৃত্যুর খবর পেয়ে শুভানুধ্যায়ী অনেকেই তার বাসভবনে ছুটে যান। সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আজ দুপুর ১২ থেকে ১টা পর্যন্ত তার মরদেহ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে  রাখা হবে। এরপর দুপুর ২টায় তেজগাঁও চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে। রাবেয়া খাতুন দুই ছেলে, দুই মেয়ে, নাতি-নাতনি, আত্মীয়স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল আইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর তাঁর বড় ছেলে।

রাবেয়া খাতুনের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, জাসদনেত্রী শিরিন আকতার এমপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।

কথাসাহিত্যিক হিসেবে সমধিক পরিচিত হলেও রাবেয়া খাতুন এক সময় শিক্ষকতা করেছেন। সাংবাদিকতার সঙ্গেও দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন। ইত্তেফাক, সিনেমা পত্রিকা ছাড়াও তাঁর নিজস্ব সম্পাদনায় পঞ্চাশ দশকে বের হতো ‘অঙ্গনা’ নামে একটি মহিলা মাসিক পত্রিকা। বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত এই সাহিত্যিকের প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা একশরও বেশি। তার গল্পে নির্মিত হয়েছে একাধিক চলচ্চিত্র। রাবেয়া খাতুন উপন্যাস লিখেছেন পঞ্চাশটিরও বেশি। এ পর্যন্ত চারখন্ডে সংকলিত ছোটগল্পের সংখ্যা চারশোরও বেশি। রাবেয়া খাতুন বাংলাদেশের ভ্রমণসাহিত্যের অন্যতম লেখক।  ছোটগল্প দিয়ে শুরু হলেও লেখক পরিচয়ে প্রথমত তিনি ঔপন্যাসিক। প্রথম উপন্যাস মধুমতী (১৯৬৩) প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই শক্তিমান কথাসাহিত্যিক হিসেবে পরিচিতি পান। বেশ কিছু আত্মজৈবনিক স্মৃতিমূলক রচনা লিখেছেন। একাত্তরের নয় মাস বইয়ে লিখেছেন একাত্তরের শ্বাসরূদ্ধকর দিনগুলোর কথা। ছোটগল্প ও উপন্যাসের চলচ্চিত্রায়ণ হয়েছে প্রেসিডেন্ট (১৯৬৬), কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি (২০০৩), মেঘের পরে মেঘ (২০০৪), ধ্রুবতারা, মধুমতি (২০১০) ইত্যাদি। সাহিত্যচর্চার জন্য পেয়েছেন একুশে পদক (১৯৯৩), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৩), নাসিরউদ্দিন স্বর্ণপদক, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ পুরস্কার,  অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার, নাট্যসভা পুরস্কার, টেনাশিনাস পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা।

সর্বশেষ খবর