বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রেজাউল করিম (৩০) নামে এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। ঘটনার বিচার দাবি করেছেন নিহতের স্বজনরা। রেজাউল করিমকে শারীরিক ক্ষত নিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল বলে জানিয়েছে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার। তবে এই মৃত্যু নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি হাসপাতালের পরিচালক। অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ বাড়ি সংলগ্ন সাগরদী হামিদ খান সড়কের একটি চায়ের দোকানে বসা ছিলেন রেজাউল করিম। রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মহিউদ্দিন তাকে মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করে। তার কাছ থেকে ১৩৮ গ্রাম গাঁজা এবং ৪ পিস নেশাজাতীয় ইনজেকশন উদ্ধারের দাবি করে ওই দিন রাত সাড়ে ১১টায় কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন মহিউদ্দিন। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পরদিন শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ। রেজাউলের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের নির্যাতনে তার মৃত্যুর জোরালো অভিযোগ করা হয়েছে। তাদের দাবি সুস্থ মানুষটাকে ধরে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনে হত্যা করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশের কঠোর বিচার দাবি করেন নিহতের বাবা মো. ইউসুফ মুন্সি। রেজাউল করিমকে শারীরিক ক্ষত নিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল বলে জানিয়েছে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. শাহেআলম। তিনি জানান, আদালতের নির্দেশে তাকে প্রথমে কারা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে পয়লা জানুয়ারি রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে শেরেবাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫ মিনিটে মৃত্যু হয় রেজাউল করিমের। তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে স্ট্রোক উল্লেখ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে স্পর্শকাতর উল্লেখ করে এ ঘটনায় কিছুই বলতে রাজি হননি শেরেবাংলা মেডিকেলের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন। এ ঘটনা তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান। আইনের ব্যত্যয় হলে অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি। এলএলবি পাস রেজাউল নগরীর সাগরদী বাজারের মাংস ব্যবসায়ী মো. ইউনুস মুন্সির ছেলে। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে বড়। তার স্ত্রী রয়েছে।
