বুধবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রেমের বিরোধের জেরে খুন রাজু

ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরের মধুখালীর জাহাপুর ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দির রাজু সাহা (২৪) খুনের রহস্য উদঘাটন করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। প্রেমের বিরোধের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। খুনে জড়িত সন্দেহে জসীম মোল্যাকে আটকের পর তিনি পুলিশের কাছে রাজু সাহার হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানানো হয়েছে। গতকাল দুপুরে ফরিদপুর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রাজু সাহা খুনের বিস্তারিত ঘটনা জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা। এর আগে গত রবিবার রাজু সাহার লাশ নির্মাণাধীন বাড়ির টয়লেটের ভিতর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে জামাল পাশা জানান, রাজু সাহার বড় ভাই সুমন সাহা মধুখালীর জাহাপুর ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দিতে বাড়ি নির্মাণ করছেন। রাজু সাহা নির্মাণ কাজ দেখাশোনা করতেন। সেখানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন রাজু সাহার ঘনিষ্ঠ জসিম মোল্যা। জসীম মোল্যা রাজমিস্ত্রি হলেও তিনি রাজুর সঙ্গে সব সময় থাকতেন। একসঙ্গে নেশাও করতেন তারা। শনিবার সন্ধ্যায় জসীম রাজু সাহাকে ফোন করে বলে নির্মাণাধীন বাড়িতে থাকতে হবে। এতে রাজু সাহা রাজি হয় এবং রাতে জসীমের সঙ্গে থাকেন। রাতে দুজন একসঙ্গে নেশাও করেছে। পরে গভীর রাতে রাজু সাহা প্রস্রাব করার জন্য বের হলে জসীম পেছন থেকে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে। পরে রাজু সাহার লাশটি মিস্ত্রিদের জন্য ব্যবহৃত টয়লেটের ভিতরে ফেলে ইট-বালু চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জসীম স্বীকার করে, তিনি এবং রাজু সাহা একই মেয়েকে ভালোবাসতেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বিরোধ বাধে। ভালোবাসার মেয়েটিকে পেতে রাজু সাহাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে জসীম। সে অনুযায়ী একাই জসীম রাজু সাহাকে খুন করে। এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রাজু সাহা এলাকার একটি মেয়ের ঘরে অপকর্ম করলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। তাছাড়া রাজু সাহা ধর্মান্তরিত হয়ে এক মুসলিম নারীকে ২০১৮ সালে বিয়ে করেন। সে ঘরে একটি সন্তানও রয়েছে। রাজু সাহা হত্যার পর স্বামী দাবি করে সেই নারী লাশটি তার হেফাজতে নিতে পুলিশের কাছে আর্জি জানায়। এতে রাজু সাহার ধর্মান্তরিত ও বিয়ের ঘটনাটি ফাঁস হয়। স্থানীয় এলাকাবাসী, এমনকি রাজুর পরিবারের লোকজনও জানত না রাজু ধর্মান্তরিত হয়েছেন এবং বিয়ে করেছেন। ওই নারীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের পক্ষ থেকে বিয়ের কাবিননামা যাচাইয়ের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। কাবিননামা সঠিক হলে লাশটি তার স্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হবে। আর কাবিননামা সঠিক না হলে রাজুর পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করবে পুলিশ। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত রাজুর মরদেহ ফরিদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালের হিমঘরে থাকার কথা পুলিশ জানিয়েছে।

সর্বশেষ খবর