মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
তৃতীয় ধাপের পৌর ভোট

তিন জেলায় নির্বাচনী সংঘর্ষ

প্রতিদিন ডেস্ক

দেশের তিন জেলায় পৌর নির্বাচনী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব সংঘর্ষে এক প্রার্থীর পিস্তল ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া মেহেরপুর, কুমিল্লা ও কুষ্টিয়ায় পৃথক পৃথক সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মেহেরপুরের গাংনী পৌর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আহম্মেদ আলীর সমর্থকদের মধ্যে গতকাল সংঘর্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল ইসলামসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় আশরাফুলের পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে ২ রাউন্ড গুলি ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত ছাত্রলীগ কর্মী রাজুকে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বেলা ২টার দিকে পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড শিশিরপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এ ঘটনায় মেয়র আশরাফুল ইসলামকে গ্রেফতার ও তার পিস্তল জব্দের দাবি জানান। আহতদের মধ্যে নাজমুল হোসেন রাজু ও রোকনুজ্জামানের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেন, বেলা ২টার দিকে তার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে প্রথমে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে যান। সেখানে তাকে বাধা দেন কিছু লোক। তারপর ৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণা চালানোর সময় ইসমাইল হোসেন, রেন্টু ও ইনামুল হকের নেতৃত্বে কিছু লোক তার কর্মীদের বেধড়ক মারপিট করে। এ সময় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আহম্মেদ আলীর সমর্থক ইসমাইল তার কোমরে থাকা লাইসেন্সকৃত পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে দুই রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। গাংনী বাজারে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আহম্মেদ আলী বলেন, মেয়র আশরাফুল ইসলাম তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা করেছেন। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মী রাজুসহ ৫/৬ জন আহত হন। আশরাফুল তার পিস্তল থেকে ২ রাউন্ড গুলি করেছেন। এভাবে চললে নির্বাচনী পরিবেশ থাকবে না। তিনি আশরাফুলের পিস্তল জব্দ ও তাকে গ্রেফতারের দাবি জানান। এ ঘটনার পরপরই আহম্মেদ আলীর নেতৃত্বে গাংনী হাসপাতাল বাজার এলাকা থেকে একটি মিছিল বের হয়। গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।

কুমিল্লা : চান্দিনা পৌরসভার নির্বাচনী প্রচারণার সময় দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। গতকাল পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছায়কোট এলাকায় ওই সংঘর্ষ হয়। আহতদের মধ্যে ১০ জনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা চান্দিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী শামীম হোসেন কর্মী সমর্থকদের নিয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণা চালান। নৌকা সমর্থিত স্থানীয় কিছু লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারণা নিয়ে উসকানিমূলক কথা বলেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। শামীম হোসেন বলেন, তিনি গণসংযোগ করতে ছায়কোট এলাকায় গেলে ছালাম কাউন্সিলরের নেতৃত্বে নৌকার লোকজন তার নেতা-কর্মীর ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় বিকালে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন শামীম হোসেন। আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী শওকত হোসেন ভূইয়া জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম প্রতিদিন গাড়িবহর নিয়ে গণসংযোগের নামে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন। যেখানেই নৌকা সমর্থিত লোকজন পাচ্ছেন তাদের মারধর করছেন। চান্দিনা থানার ওসি শামসউদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, গতকাল দুই গ্রুপের সংঘর্ষের খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ পর্যন্ত কেউ লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি। কুষ্টিয়া : ভেড়ামারায় দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। রবিবার রাত ৮টার দিকে ৪ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব ভেড়ামারায় এ ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শামীমুল ইসলাম ছানা ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক (জাসদ) মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুল কবির টুটুলের সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। আহত উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক মিয়াকে ভেড়ামারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক এসএম আনছার আলীকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভেড়ামারা থানার ওসি শাহ জামাল জানান, আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায়  কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ করেনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর