বুধবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

আবারও তিন মাসের জন্য স্থগিত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ

রফিকুল ইসলাম রনি

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে আগামী তিন মাস আওয়ামী লীগের সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম আবারও স্থগিত করা হয়েছে। চলতি মাস থেকে আগামী মার্চ পর্যন্ত জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন সম্মেলন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি জনসমাগম হয় এমন কার্যক্রমও বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্মেলন স্থগিত ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা তৃণমূলে পৌঁছে দিচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘গত বছরের মার্চ থেকেই নভেম্বর পর্যন্ত আমাদের সাংগঠনিক ইউনিট সম্মেলন ও কমিটি গঠন বন্ধ ছিল। করোনার প্রকোপ কিছুটা দুর্বল হওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবার তৃণমূলের সম্মেলন শুরু করেছিলাম। কিন্তু করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ও শীতকালে সংক্রমণ বৃদ্ধির যে আশঙ্কা, সেটা বিবেচনা করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লোক জড়ো হয় এমন সভা সমাবেশ ও সম্মেলন বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন।’ গত বছর মার্চে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর লকডাউনের বিধিনিষেধ জারি হলে পুরো বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও জনজীবন প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক কর্মকান্ডও অনেকটা ঘরবন্দী। ভার্চুয়াল সভা-সমাবেশে সীমাবদ্ধ হয় সাংগঠনিক কর্মকান্ড। সাংগঠনিক কর্মকান্ড পরিচালনা না করলেও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ত্রাণ বিতরণ ও করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কেন্দ্রীয়ভাবে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটি তৎপর ছিল সারা বছর। নভেম্বরের দিকে করোনাভাইরাসের প্রকোপ কিছুটা কমে এলে আবারও সাংগঠনিক কার্যক্রমে সক্রিয় হয় আওয়ামী লীগ। তৃণমূলে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সম্মেলন করার প্রস্তুতিও শুরু হয়। একটি জেলা ও সাতটি উপজেলার সম্মেলন শেষ করে। সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয় দুটি জেলা ও কমপক্ষে ৩০ উপজেলার। সেগুলো চলতি মাসে ও ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়ায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্মেলন আয়োজনে আবারও ছেদ পড়ল। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চলতি ও আগামী মাসে বেশ কয়েকটি সাংগঠনিক ইউনিটে সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা ছিল। আপাতত সেগুলো হচ্ছে না। দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট্র জেলা-উপজেলার শীর্ষ নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’ তৃণমূল সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের অনেক উপজেলায় এক যুগ, দেড় যুগ পর্যন্ত সম্মেলন হয় না। কমিটিতে থাকা অনেকেই মারা গেছেন। শূন্য পদ নিয়েই চলছে সাংগঠনিক কার্যক্রম। আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের পর সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর নির্দেশনা দিয়েছিলেন দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছরের নভেম্বর থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সম্মেলন শুরু হয়। চলতি মাস ও আগামী ফেব্রুয়ারিতে জেলা-উপজেলা সম্মেলন ঘিরে তৃণমূলের নেতা-কমীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা শুরু হয়। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে সেই আনন্দ কাজে লাগাতে পারেনি তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। সূত্রমতে, বাংলাদেশকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী এপ্রিলে করোনা সংক্রমণ কমে আসতে পারে। তখন পুনরায় এই সম্মেলন কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর