বুধবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
কৃষি

দিনাজপুরে বেড়েছে সরিষার চাষ

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

দিনাজপুরে বেড়েছে সরিষার চাষ

সরিষার চাষ দিনাজপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষা চাষে ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পেয়ে লাভবানের আশা কৃষকদের। এখন ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে সরিষার মাঠ। মাঠে মাঠে হলুদের সমারোহ। বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। দৃষ্টিনন্দন এমন অপরূপ দৃশ্য দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গ্রামবাংলায় ছুটে আসেন অনেকে। সরিষা খেতও যেন একটি বিনোদন কেন্দ্র। গত কয়েক বছরে এই এলাকার চাষিরা মধ্যবর্তী ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন। তাই এবার প্রায় প্রতিটি উপজেলাতেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি সরিষা চাষ হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর দিনাজপুর জানায়, চলতি মৌসুমে দিনাজপুর জেলায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১৩ হাজার ১৬২ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ২৮০ টন। এবার বারি-১৪, বারি-১৭. বারি-১৮ জাতের সরিষার চাষাবাদ করা হয়েছে। কৃষকদের উন্নত জাতের বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে। দিনাজপুরে সরিষা চাষের সঙ্গে সঙ্গে চাষ করা হচ্ছে মৌমাছির। এতে সরিষার উৎপাদনও বেশি হচ্ছে এবং কৃষকরা অধিক লাভবান হচ্ছেন। সরিষা খেতে মৌমাছি চাষ করলে ১৫ থেকে ২০ ভাগ ফলন বেড়ে যাবে। হাকিমপুর উপজেলার ইসমাইলপুর, ডাঙ্গাপাড়া, জালালপুর, ছাতনি, বোয়ালদাড়সহ বিভিন্ন এলাকাজুড়ে সরিষার চাষ হয়েছে। এবার শুধু হাকিমপুরে ১১৯৬ টন সরিষা উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। হাকিমপুরের চন্ডিপুর গ্রামের কৃষক অনুপ বসাক বলেন, সরিষা চাষ করলে ঠিক সময়ের মধ্যে ফসল তুলে নিয়ে তাতে ধান চাষ করা যায়। এবার প্রায় ৯ বিঘা জমিতে সরিষা রোপণ করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় পোকামাকড়ের তেমন কোনো সমস্যা না হওয়ায় ফলন ভালো হবে। হাকিমপুরের ইসমাইলপুরের কৃষক ইদ্রিস আলী বলেন, সরিষা চাষের সময় সেচ ও সার দিয়ে রোপণের পর আর তেমন খরচ নেই। প্রতি বিঘায় প্রায় ৩ হাজার টাকা খরচ হলেও যে পরিমাণ সরিষা পাওয়া যাবে, তাতে ৮/১০ হাজার টাকা পান কৃষকরা। বাড়তি হিসেবে সরিষার গাছগুলো পরিবারের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। গত বছর ১৭০০-১৮০০ টাকায় বিক্রি করলেও এবারে তেলের দাম বেশি হওয়ায় সরিষার দাম ২ হাজারের বেশি হবে বলে আশা করছি। কৃষক মনতাজ হোসেন বলেন, সরিষা চাষে তেমন কোনো খরচ নেই। বিঘায় ৫/৭ মণ করে সরিষা পাই। আবার সরিষা তুলে সেই জমিতে ধানও বেশ ভালো হয়। তেমন কোনো সার দিতে হয় না। হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ড. মমতাজ সুলতানা বলেন, সরিষা চাষ করে আশানুরূপ দাম ও লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। ফলে দিন দিন সরিষার চাষাবাদ বাড়ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর