শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
কৃষি

বোরোর বীজতলা ট্রেতে পাওয়া যাবে সবল চারা

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

বোরোর বীজতলা ট্রেতে পাওয়া যাবে সবল চারা

বগুড়ার আদমদীঘিতে বোরো চাষে নতুন মাত্রা যোগ হতে চলেছে। আধুনিক পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করে বোরো চাষের প্রস্তুতি নিয়েছে ১৫০ বিঘা জমির চাষিরা। ইতিমধ্যে ট্রে পদ্ধতিতে বীজতলা ও চারা তৈরির কাজ সম্পন্ন করে ভালো ফলনের লক্ষ্যে চাষাবাদ শুরু হচ্ছে। কৃষি বিভাগ বলছে, বোরোর বীজতলা ট্রে পদ্ধতিতে করলে কুয়াশা বা শৈত্যপ্রবাহে নষ্ট হবে না। ট্রে পদ্ধতির চারাগুলো সুস্থ ও সবল হবে। এতে চাষে ফলন বেশি পাওয়া যাবে। আদমদীঘিতে এই পদ্ধতি সফল হলে পরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে। বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের পান্নাথপুর, পানলা ও কেল্লাপাড়া মাঠের ১৫০ বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের এই ধান চাষ করা হবে। এ কারণে পান্নাথপুর মাঠে ৪ হাজার ৫০০টি ট্রেতে ৩০০ কেজি বোরো বীজ বপন করে চারা তৈরি করা হয়েছে। সনাতন পদ্ধতিতে পতিত জমিতে বোরোর বীজতলা তৈরি করে তা চাষের জমিতে নেওয়া হতো। আধুনিক পদ্ধতিতে ট্রেতে এই প্রথম বার বীজতলা ও চারা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় কাজটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন সান্তাহার ও ছাতনী ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কামরুল আহসান কাঞ্চন। চারা তৈরির পর নিয়ম অনুসরণ করে মেশিনের মাধ্যমে বোরোর চাষ শেষ করা হবে।

 এর সঙ্গে নিয়মিত সার, সেচ, আগাছা পরিষ্কার করা হবে। সনাতন পদ্ধতিতে চারা তৈরি হয় ৪০ থেকে ৪৫ দিনে। আর এই চারা তৈরি হয় ২৫ থেকে ৩০ দিনে। ট্রের মধ্যে চারা থাকে বলে যত্ন বেশি হয়। সে কারণে প্রতিটি চারা হয় সবল। বীজতলা থেকে ট্রের মাধ্যমে বীজ সংগ্রহ করে যন্ত্রের মাধ্যমে চারা রোপণ ও কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটাও হবে। অর্থাৎ এবার আধুনিক পদ্ধতিতেই কৃষি কাজ সম্পন্ন হবে। এ পদ্ধতিতে চাষিরা কম খরচে তাদের ধান ঘরে তুলতে পারবে। ইতিমধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের বগুড়া অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ জিএম এ গফুর, উপপরিচালক কৃষিবিদ দুলাল হোসেন, অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ শাহাদুজ্জামান (উদ্যান), কৃষিবিদ আ জা মু আহসান শহীদ সরকারসহ অনেক কর্মকর্তা বীজতলা পরিদর্শন করেছেন। আদমদীঘি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিঠু চন্দ্র অধিকারী জানান, দিন দিন আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে কৃষি শ্রমিকের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। ফলে কৃষিতে শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাচ্ছে, তাতে ধানের উৎপাদন খরচও বেড়ে যাচ্ছে। ট্রে পদ্ধতি অনুসরণ করলে বোরোর চারা সবল হবে বেশি। আর সবল চারা দ্রুত বেড়ে ফলনও দেবে। বেশি ফলন হলে কৃষকের লাভও বেশি হবে। যাতে কৃষক খরচ কমিয়ে বেশি লাভবান হতে পারে সে বিষয়ে কাজ চলছে। এটি সফল হলে পরবর্তীতে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর