শনিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ভরাট হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কুরুলিয়া নদী

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অপকৌশলে ভরাট চলছে কুরুলিয়া নদী। পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধের ব্লক পরিবর্তনের কাজ নিয়ে নদীর বিশাল অংশ বালি দিয়ে ভরাট চলছে। প্রকাশ্যে দিবালোকে বালি দিয়ে নদী ভরাট করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। পানি উন্নয়ন বোর্ড আইনের ফাঁক গলিয়ে ভরাটে সহযোগিতা করছে। ২০১০ সালের দিকে নদীর সীমানা নির্ধারণ করে ব্লক দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে পাউবো। সে সীমানা থেকে অনেক ভিতরে গিয়ে বালি দিয়ে নতুন বাঁধ নির্মাণ করেছে ঠিকাদার। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে কাউতলীতে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৭ ফুট শহর রক্ষা বাঁধের ব্লক নতুন করে স্থাপনের জন্য দরপত্র ঘোষণা করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ১৩ লাখ টাকার কাজটি পায় কুরুলিয়া নদী সংলগ্ন বসতির বাসিন্দা ও ঠিকাদার নাইমা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোখলেছুর রহমান। নিজের বাড়ির সামনে হওয়ায় কৌশলে তিনি প্রায় ৫-৭ শতাংশ নদীর জায়গা মাটি দিয়ে ভরাট করে। এরপর পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্লক বসানোর কাজ শুরু করে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এ কাজ শেষ না করতে পারায় কাজটি সময় বাড়িয়ে মেয়াদ ২০২০-২০২১ করা হয়। বর্তমানে এ কাজ চলমান।

নদীর জমি ভরাট করায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ঠিকাদার স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় অনেকেই প্রকাশ্যে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। মোখলেছুর রহমান দাবি করেছেন শুধু এ অংশটুকুই নয়, নদীর ভিতরে তাদের অনেক জমি ভেঙে বিলীন হয়ে গেছে। আইন অনুযায়ী, নদীগর্ভে বিলীন হওয়া জমি ৩০ বছরের মধ্যে জেগে উঠলে তা জমির মালিক পাবেন। তবে এর জন্য জমি বিলীন হওয়ার পরপর কিছু নির্দিষ্ট নিয়মকানুন উল্লেখ করা আছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড আইন ২০০০ এবং বাংলাদেশ পানি সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন ২০১৯ (খসড়া) অনুযায়ী তারা বিলীন হওয়া অংশ ভরাট করে ভূমির মালিককে ভূমি ফিরিয়ে দিতে পারেন। পানি উন্নয়ন আইনের ৬ এর (গ)-তে কাঠামোগত কার্যাবলীতে ভূমি সংরক্ষণ, ভূমি পরিবৃদ্ধি ও পুনরুদ্ধার এবং নদীর মোহনা নিয়ন্ত্রণের কথা উল্লেখ রয়েছে। তিনি জানান, কাউতলী অংশে চারটি সেতু থাকার কারণে পানি ডেড ফোর্স ক্রিয়েট করে। এর ফলে এখানে দুই পাড়ে গোল আকৃতি ধারণ করেছে। তাই দুই পাশ থেকে ভরাট করে জমির মালিকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও তাদের রয়েছে বলে জানান তিনি। জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমিনকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। তিনি এরই মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে ভরাট এলাকা পরিদর্শন করেন।

সর্বশেষ খবর