শনিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

কথার ফুলঝুরিতে প্রতারণা করত ওরা, গ্রেফতার ২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

চাকরি দেওয়ার কথা বলে ওরা সহজ-সরল তরুণ-তরুণীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছিল মোটা অঙ্কের টাকা। ওদের মিথ্যা কথার ফুলঝুরিতে স্বপ্ন বুনে এখন অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এমনই তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর শাহআলী, পল্লবী, কাফরুল ও তেজগাঁও এলাকা থেকে ভুয়া চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের ২৩ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪। এ সময় তাদের কবল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৫০ জন ভুক্তভোগীকে।

পরে গ্রেফতারকৃতদের সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। 

র‌্যাব-৪ এর উপঅধিনায়ক মেজর কামরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, অভিযানে শাহ আলী থানার ‘লাইফ গার্ড সিকিউরিটি অ্যান্ড সাপ্লাই লিমিটেড’ নামে ১টি প্রতিষ্ঠান থেকে ১০০টি জীবন বৃত্তান্তের ফরম, ১৫টি চাকরির আবেদন ফরমের বই, চারটি রেজিস্টার, চারটি সিলমোহর, সাতটি মোবাইল, ২০০টি ভিজিটিং কার্ড এবং নগদ ৫ হাজার টাকাসহ পাঁচজন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার প্রতারকরা হলেন- তাসলিমা সুলতানা (৩০), সায়মা ইসলাম (২৪), মৌসুমি আক্তার (২৮), সাইফুল ইসলাম (৩০) ও রাকিব হোসেন (২০)।

তিনি আরও বলেন, বেকার যুবক-যুবতীদের আউট সোর্সিংয়ের জন্য উপযোগী করে তুলতে সিপিএম নামের ১টি কোর্স করিয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্নজনের কাছ থেকে ২ হাজার, ৩ হাজার এবং ৫ হাজার টাকা করে নিয়েছিল ‘বিজবন্ড আইটি লিমিটেড’ কোম্পানির মালিক হামিদ। ঢাকায় দুটি এবং খুলনায় ১টি শাখা খুলে দীর্ঘদিন ধরে তিনি অভিনব পদ্ধতিতে হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অঙ্কের টাকা। মিরপুর-১১ নম্বরের অফিস থেকে ৫০টি টাকা প্রাপ্তির রশিদ, ৩০০টি ভর্তি ফরম, ৬৫টি অঙ্গীকারনামা, ৭০টি চাকরির নিয়োগ ফরম, ২০০টি কমিশন ভাউচার, সাতটি রেজিস্টার, ১টি প্যাড এবং চারটি মানি রিসিটসহ সুমনা খাতুন (১৯), সোহেল ফরাজি (২৯) এবং  শামীমা আক্তারকে (২৮) গ্রেফতার করা হয়। 

র‌্যাব বলছে,  ‘বিজবন্ড আইটি লিমিটেড’-এর তেজগাঁও শাখায় অভিযান চালিয়ে ১৫টি টাকা প্রাপ্তির রশিদ, ১টি ভর্তি ফরমের বই, পাঁচটি চুক্তিপত্র, ১টি সিল, ৫০টি ভিজিটিং কার্ড, ৪৫টি আইডি কার্ড, ১৫টি জীবনবৃত্তান্ত এবং ১৫টি কমিশন ভাউচারসহ এর মালিক আবদুল হামিদ (৩৮) তার ভাই আবদুল জব্বার (৩৬), গাজিউর রহমান (২২), আবদুস সালাম (৩৬), মাহমুদা খাতুন (৩০), মাসুম কবির (২৯), ফরিদ ইমরান (২৬), এনামুল হক (২৭) ও মাহমুদা খাতুনকে (৩০) গ্রেফতার করা হয়। কাফরুল থানার শাহ আলী প্লাজায় ‘ডিজিট-৪ সিকিউরিটি অ্যান্ড লজিস্টিকস সার্ভিসেস লিমিটেড’ নামের ভুয়া প্রতিষ্ঠান থেকে ১০টি প্রচারপত্র, পাঁচটি আইডি কার্ড, ১০টি মনোগ্রাম এবং ৪০টি ভর্তি ফরমসহ মো. কামরুজ্জামান (৩৩), মশিউর রহমান (২৭), মো. সোহাগ  (১৯), মো. রুবেল (২৮), মমতাজ নায়রী (৪৪) ও শাহীনূর আক্তারকে (২৭) গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মেজর কামরুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতাররা তাদের অপকর্মের কথা স্বীকার করেছে। তারা রাজধানীসহ দেশের ভিন্ন এলাকায় অফিস ভাড়া করে বিভিন্ন নামে-বেনামে ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠান খুলত। অল্প শিক্ষিত বেকার ও আর্থিকভাবে অসচ্ছল তরুণ-তরুণীদের আকর্ষণীয় ও উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রশিক্ষণের নামে অর্থ আদায় ও ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে প্রতারক চক্রটি বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল।

সর্বশেষ খবর