বুধবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

নির্দলীয় হওয়া উচিত

-শারমিন মুরশিদ

নির্দলীয় হওয়া উচিত

স্থানীয় সরকার নির্বাচন আবারও নির্দলীয়ভাবে করা উচিত বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষক ও ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ। তিনি বলেন, নির্দলীয় নির্বাচন হলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) শাসক দলের চাপের ভিতরে থাকবে না। ইসি কাজ ভালো করতে পারবে। গতকাল নির্বাচনে সহিংসতা, দলীয়  কোন্দলের বিষয়ে আলাপকালে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন। এই নির্বাচন বিশ্লেষক বলেন, অবশ্যই আবারও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয়তে ফিরে যাওয়া উচিত। এ নির্বাচন অবাধ করে দেওয়া উচিত। যাতে দল, দলের বাইরে সবাই অংশগ্রহণ করতে পারেন। যেই দল এখন ক্ষমতায় আছে, সেই দলও কিন্তু রেহাই পাবে। কারণ এই যে দলীয় নির্বাচন করছে, এর ফলে দলও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভিতরে ভিতরে দলে দ্বন্দ্বের জায়গাগুলো আস্তে আস্তে বড় হবে। তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচনী কালচারটা হচ্ছে সহিংস। নির্দলীয় হলে যেটা হবে। নির্বাচন কমিশন শাসক দলের চাপের ভিতরে থাকবে না। তখন ইসি কাজটা ভালোভাবে করতে পারবে। তখন ইসিকে সবার স্বার্থ দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এখন সেই জায়গাটায় নেই।

তিনি বলেন, আমরা যা আশঙ্কা করেছিলাম তাই ঘটছে। এত দিন বিরোধী রাজনৈতিক দল যে কথাগুলো বলেছিল। এখন সরকারি দলের ভিতরে যারা হেরে যাচ্ছে অথবা যারা জনপ্রিয় কিন্তু ভোট নিশ্চিত করতে পারছে না তারা এখন প্রতিবাদী হয়ে উঠেছেন। কারণ তাদের স্বার্থে ঘা লেগেছে। তিনি বলেন, একই অন্যায় যখন অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি হচ্ছিল, তখন তারা খুব বাহবাহ করেছে। এখন কোন্দলটা হয়ে গেছে নিজেদের ভিতরে। আমরা জানতাম এটা হবে। যারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন, বিশ্লেষণ করেন, তারা ভালো করেই জানতেন আজ হোক, কাল হোক একটা অন্তর্দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ হবে। অবশ্য এটা অন্যায়ের প্রতিবাদও বটে। তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে কেউ কেউ অন্যায় করছে। তারা নিজের দলের সহকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্যায় করছে। সেই অন্যায় যারা করছেন, তারা হয় তুলনামূলকভাবে বেশি ক্ষমতা রাখেন, বেশি অর্থবান, বেশি দাপটে। তবে তার মানে এই নয় যে, তারা বেশি জনপ্রিয়। আমাদের নির্বাচন সেটা প্রমাণ করে না। যে বিজয়ী হয় সে বেশি জনপ্রিয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন মানে দ্বন্দ্ব, সহিংসতা। তথা সহিংস একটি আয়োজন। সহিংস আয়োজনটাই হচ্ছে বাংলাদেশের নির্বাচনের প্রকৃত রূপ। আগে হয়েছিল আমার দলের সঙ্গে অন্য দলের। এখন হচ্ছে আমার সঙ্গে আমার দলের অন্য কারও। যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে এই জায়গা থেকে। এখন তারা তাদের শত্রু হয়ে গেছে। এটা রাজনৈতিক দলের জন্য কতখানি ক্ষতিকর হচ্ছে এবং হবে, সেটা আমরা বারবার বলেছি। কেউ তোয়াক্কা করেনি। তিনি বলেন, আমরা বারবার বলেছি, আপনারা নতুন করে ভেবে দেখুন দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন করবেন কিনা। এটা না করাটাই ভালো। দলীয় নির্বাচন না হলে, দ্বন্দ্বটা দলে দলে থেকে যেত। দ্বন্দ্ব মুক্ত হতো না। কিন্তু এখন যে খেসারত দিতে হবে শাসক দলকে। তাদের নিজেদের ভিতরে যে ভাঙনটা তৈরি হবে। তারা কীভাবে মোকাবিলা করবে সেটা তা-ই এখন দেখার বিষয়।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর