সোমবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

সংক্রমণ হারে আশার আলো

২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ৪৭৩, মৃত্যু ২০

শামীম আহমেদ

সংক্রমণ হারে আশার আলো

করোনাভাইরাস সংক্রমণ হারে আশার আলো দেখছে বাংলাদেশ। গত ১৩ দিনের মধ্যে ১০ দিনই সংক্রমণ হার পাঁচ শতাংশের মধ্যে ছিল। বাকি তিন দিন ছিল ছয় শতাংশের নিচে। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ, যা ৪ এপ্রিলের পর সর্বনিম্ন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে সংক্রমণ হার পাঁচ শতাংশের নিচে থাকলে সেটাকে নিরাপদ সংক্রমণ বলা যায়। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর সংক্রমণ বাড়তে বাড়তে ৩ আগস্ট ৩১ দশমিক ৯১ শতাংশে দাঁড়ায়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যে দেখা গেছে, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হার ২৮২ দিন পর গত ১২ জানুয়ারি আবারও পাঁচ শতাংশে নেমে আসে। পরদিনই তা দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়ে যায়। ১৪ জানুয়ারি আবার পাঁচ শতাংশের নিচে নামে। ১৫ জানুয়ারি আবারও পাঁচ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি পাঁচ শতাংশের নিচে থাকার পর ১৮ জানুয়ারি আবারও বেড়ে পাঁচ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। এর পর থেকে গত ছয় দিন টানা পাঁচ শতাংশের নিচে ছিল সংক্রমণ হার। এর মধ্যে চার শতাংশের নিচে ছিল তিন দিন।

এ ব্যাপারে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সংক্রমণ হার ৫ শতাংশের নিচে নামা অবশ্যই আশার আলো দেখার মতো বিষয়। তবে এই হার পর পর চার সপ্তাহ বজায় থাকতে হবে। তাহলেই কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলা যাবে। এ জন্য কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে সবাইকে। মনে রাখতে হবে, সংক্রমণ কমে গিয়ে আবারও বাড়তে পারে। এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধিই আমাদের জন্য ভ্যাকসিন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় (রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ১৪ হাজার ১৬৯টি নমুনা পরীক্ষায় ৪৭৩ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এই সময়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫১৪ জন, যা শনাক্ত রোগীর চেয়ে ৪১ জন বেশি। গত এক দিনে মারা গেছেন আরও ২০ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে পাঁচ লাখ ৩১ হাজার ৭৯৯ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৮ হাজার ২৩ জন ও সুস্থ হয়ে উঠেছেন চার লাখ ৭৬ হাজার ৪১৩ জন। সুস্থ ও মৃত বাদে বর্তমানে দেশে শনাক্ত হওয়া সক্রিয় করোনা রোগী আছে ৪৭ হাজার ৩৬৩ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২ হাজার ৫৩ জন। বাকি ৪৫ হাজার ৩১০ জনই বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গতকাল পর্যন্ত শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ছিল ৮৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫১ শতাংশ। তিন মাস আগে গত ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত সুস্থতার হার ছিল ৭৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। তিন মাসে সুস্থতার হার বেড়েছে প্রায় ১১ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২০ জনের মধ্যে ১৬ জনই পুরুষ ও চারজন নারী। সবার মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। বয়স বিবেচনায় মৃতদের মধ্যে ১৩ জন ছিলেন ষাটোর্ধ্ব, পাঁচজন পঞ্চাশোর্ধ্ব, একজন চল্লিশোর্ধ্ব ও একজনের বয়স ছিল ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে ১২ জন ঢাকা, পাঁচজন চট্টগ্রাম, দুজন রাজশাহী ও একজন ছিলেন খুলনা বিভাগের বাসিন্দা। এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যুর ৫৫ দশমিক ৬৪ ভাগই হয়েছে ঢাকা বিভাগে। বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা সংক্রমণের তথ্য জানানো হয় ও ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর