মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

আগুনে বাজপাখি

আলম শাইন

আগুনে বাজপাখি

অসুলভ দর্শন। তুন্দ্রা অঞ্চল থেকে পরিযায়ী আসে। দেশে খুব বেশি একটা নজরে পড়ে না। যৎসামান্য দেখা গেলেও যখন-তখন দেখা মেলে না। শুধু প্রচ- শীতে দেখা মেলে। আশির দশকে মিরপুরের উদ্ভিদ উদ্যানে দেখা যাওয়ার নজির রয়েছে। স্বভাবে ভীষণ হিংস্র। চেহারায়ও হিংস্রতার              ছাপ লক্ষ্য করা যায়। এদের হিংস্রতা নিয়ে খানিকটা বদনামও রয়েছে। বাজ গোত্রের পাখিদের মধ্যে এরাই সবচেয়ে বেশি হিংস্র। অন্যসব বাজের চেয়ে এদের নখ খুবই তীক্ষè। তলোয়ারের ফলার মতো। নিজের তুলনায় ছোট আকৃতির কোনো পাখির নাগাল পেলে সহজে ছেড়ে দেয় না। সঙ্গে সঙ্গে পিছু নিয়ে ধরে ফেলে উড়ন্ত অবস্থায়ই। ওড়ার গতি অবিশ্বাস্য, ঘণ্টায় প্রায় ৩২০ কিলোমিটার। ফলে অনেক প্রজাতির পাখি ওদের সঙ্গে ওড়ার গতিতে হেরে যায়। পাখির বাংলা নাম : ‘আগুনে বাজপাখি,’ ইংরেজি নাম ‘পেরেগ্রিন ফ্যালকন’ (Peregrine Falcon) বৈজ্ঞানিক নাম :

Falco peregrinus Tunstall। পাখি বিশারদদের কারও কারও কাছে ‘পেরেগ্রিন বাজপাখি’ নামেও পরিচিত। প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ৩৪-৫৮ সেন্টিমিটার। প্রসারিত ডানা ৭৪-১২০ সেন্টিমিটার। মাথা ও ঘাড় কালো। থুতনি, গলা, বুক রেখাহীন। ঘাড়ের পাশে সাদা ছোপ। পিঠ কালচে ধূসর। পেট লালচে-বাদামি। পেট থেকে ঊরুর ওপর পর্যন্ত কালচে মিহি সারি।

বড়শির মতো বাঁকানো ঠোঁটের গোড়া হলদেটে, অগ্রভাগ কালচে। চোখের চারপাশ এবং পায়ের বর্ণ হলুদ। তীক্ষ কালো নখ। অল্প বয়সী পাখির বর্ণ একটু ভিন্ন ধাঁচের। ওদের উপরের দিকটা বাদামি, নিচের দিক সাদা মোটা খাড়া দাগযুক্ত। প্রধান খাবার : ছোট পাখি। উড়ন্ত অবস্থায়ই ছোট পাখি শিকার করে। অথবা জলাশয়ে বিচরণকারী পাখি শিকার করে। বিশেষ করে বালিহাঁস, পানকৌড়ি এদের শিকারে পরিণত হয় বেশি। প্রজনন মৌসুম মার্চ-মে। গাছের উঁচু ডালে বাসা বাঁধে। বাসা বানাতে উপকরণ হিসেবে সরু ডালপালা। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিমে তা দেয় স্ত্রী পাখি একাই। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২৯-৩২ দিন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর