বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ঢাকা-করাচি সরাসরি যোগাযোগ চায় পাকিস্তান

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী পাকিস্তান এবার ঢাকার সঙ্গে করাচির সরাসরি যোগাযোগ সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছে। দেশটির হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এই প্রস্তাব দেন।

এ সময় পাক হাইকমিশনার তার দেশের জনগণের ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক কাজে বাংলাদেশে আসার বিষয়ে ভিসা সহজ করার জন্যও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বাণিজ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।

জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যে কিছু  ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। সেগুলো দূর করা গেলে বাণিজ্য আরও বাড়বে। উভয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা ও সুযোগ রয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগানো যায়। বৈঠকে উপস্থিত সূত্রগুলো জানায়, বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রপ্তানিতে পাকিস্তানের অ্যান্টিডাম্পিং শুল্ক আরোপের বিরোধিতা করা হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের হাইকমিশনার মূলত সরাসরি বিমান চলাচল ও ভিসার বিষয়ে গুরুত্ব বেশি দিয়েছেন। পাকিস্তানের অভিযোগ, তার দেশের ব্যবসায়ী ও জনগণ ব্যক্তিগত বা বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ভিসা চাইলেও বাংলাদেশে সহজে ভিসা পাওয়া যায় না।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকার সঙ্গে করাচির সরাসরি যোগাযোগের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে পাকিস্তান। ভারত, শ্রীলঙ্কা এমনকি নেপাল, ভুটানে যেতে সরাসরি ফ্লাইট থাকলেও ঢাকা থেকে পাকিস্তানের কোনো শহরে যেতে হয় ঘোরা পথে। একটি ট্রানজিট নিয়ে পরে সেখান থেকে কানেকটিং ফ্লাইট ধরে পাকিস্তানের করাচি ও লাহোরের মতো শহরগুলোতে পৌঁছতে হয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে ট্রানজিট হয় কলম্বো, ব্যাংকক, দুবাই ও দোহা। ঢাকা থেকে এভাবে পাকিস্তানের কোনো শহরে যেতে প্রায় ১৪ থেকে ১৬ ঘণ্টা সময় লাগে, যে সময়ে ইউরোপের যে কোনো দেশে পৌঁছানো যায়। উভয় দেশের মধ্যে যোগাযোগ সম্পর্ক সহজীকরণ করা গেলে পাকিস্তানে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি আরও বাড়বে বলেও জানিয়েছেন পাক হাইকমিশনার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ পাকিস্তানে ৫০ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। একই সময়ে আমদানি করেছে ৫৪৩ দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।। বাংলাদেশ থেকে চা, ওষুধ পণ্য, তৈরি  পোশাক, সিরামিক পণ্য, জুতা, হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড, চামড়াজাত ও পাটজাত পণ্য পাকিস্তানে রপ্তানি হয়। এ রপ্তানি আরও বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাণিজ্য জটিলতা দূর হলে পাকিস্তানের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি আরও বাড়বে। বৈঠকে হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের তৈরি সিরামিক পণ্য পাকিস্তানের বিভিন্ন সরকারি দফতরে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তৈরি পোশাক, ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্য, পাটজাত ও চামড়াজাত পণ্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে পাকিস্তানে। তিনি পাকিস্তানে বাংলাদেশি পণ্যের সিঙ্গেল কান্ট্রি মেলা করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি দুই দেশের বাণিজ্যিক সমস্যাগুলো সমাধানে জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশন (জেইসি) সভা অনুষ্ঠানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সর্বশেষ খবর