শিরোনাম
শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বরিশালে ঘনবসতি এলাকায় ইটভাটায় সর্বনাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালে ঘনবসতি এলাকায় ইটভাটায় সর্বনাশ

বরিশালের বাকেরগঞ্জের কবাই ইউনিয়নের হানুয়া গ্রামে স্কুল-মাদরাসা ও দুটি বাজারের পাশে কৃষি জমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ ইটভাটাটি ভেঙে ফেলা নিয়ে শুধুই নাটক করছে কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় জনগণের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক অবৈধ

ওই ইটভাটাটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিলেও রহস্যজনক কারণে তা ভেঙে ফেলতে সময় ক্ষেপণ করছে তারা। তবে এ বিষয়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন পরিবেশ অধিদফতরের স্থানীয় কর্মকর্তারা। কবাই ইউনিয়নের হানুয়া গ্রামে আশপাশের অন্তত ৫০০ পরিবার, হানুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হানুয়া পেয়ারপুর সালেহিয়া দাখিল মাদরাসা এবং হানুয়া ও পেয়ারপুর বাজারের মাঝখানে তিন ফসলি কৃষি জমিতে ২০১৯ সালে মেসার্স সূর্য ব্রিকস নামে একটি ইটভাটা গড়ে তোলেন কারি আলী হোসেন নামে এক ব্যক্তি। শুরুতে স্থানীয় জনগণ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইটভাটা নির্মাণে বাধার সৃষ্টি করেন। মানববন্ধন করেও প্রতিবাদ করেন তারা। স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তা এবং বিভাগীয় পরিবেশ অধিদফতরে ওই ইটভাটা উচ্ছেদের আবেদন করেন। স্থানীয়দের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ২২ অক্টেবার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সরেজমিন তদন্ত করে ওই জমি তিন ফসলি উল্লেখ করে পরিবেশ অধিদফতরে প্রতিবেদন দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদফতর ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি ওই ইটভাটার অবস্থানগত ছাড়পত্র বাতিল করে। পরিবেশ অধিদফতরের ওই আদেশের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ১২ মার্চ হাই কোর্টে রিট করেন ইটভাটার মালিক। উচ্চ আদালত একই বছরের ৩০ নভেম্বর এক আদেশে পরবর্তী এক মাসের মধ্যে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় তিন ফসলি কৃষি জমিতে থাকা ইটভাটাটি অপসারণের নির্দেশ দেয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে এক মাসের মধ্যে ওই ইটভাটাটি অপসারণ না করায় বিভাগীয় পরিবেশ অধিদফতর ফের সরেজমিন পরিদর্শন করে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে প্রতিবেদন দেয়। পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক কার্যালয় গত ১৯ জানুয়ারি এক চিঠিতে পরিবেশ অধিদফতরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট বিভাগের পরিচালককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়। স্থানীয় বাসিন্দা সুলতান আহমেদ বলেন, অদৃশ্য কোনো কালো হাতের ইশারায় অবৈধ ইটভাটাটি ভাঙা হচ্ছে না। ইটভাটাটির কারণে আশপাশের গাছপালা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে।

 এতে ওই এলাকার পরিবেশ মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে। স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মো. এজাজ রেজা বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় একটি ইটভাটা করে এলাকার মানুষকে ঝুঁকিতে ফেলা হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা, কৃষি বিভাগের প্রত্যয়ন এবং পরিবেশ অধিদফতরের চিঠি চালাচালির পরও এলাকার দরিদ্র কৃষকরা গত দুই বছরেও কোনো প্রতিকার পাননি।

 এ কারণে ওই এলাকার তিন ফসলি জমি অনাবাদি হয়ে কৃষক পথে বসেছে। তারা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে ইটভাটাটি অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে পরিবেশ অধিদফতরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট বিভাগের পরিচালকের ব্যক্তিগত মুঠোফোন এবং অফিসের টেলিফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বরিশাল পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান সবুজ জানান, ওই ইটভাটাটি ভেঙে ফেলতে কর্তৃপক্ষ তাকে কোনো নির্দেশনা দেয়নি। নির্দেশ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেবেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর