সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
দুর্নীতি মামলা থেকে অব্যাহতি

হদিস মিলেছে স্বাস্থ্যের মাফিয়া মিঠুর সেই রিটের নথির

নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্পদ বিবরণী জমা না দেওয়ার মামলা থেকে স্বাস্থ্য খাতের মাফিয়া মোতাজজেরুল ইসলাম ওরফে মিঠুকে অব্যাহতি দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে হাই কোর্টে করা রিট আবেদনের নথির হদিস মিলেছে। আগামী বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী ও বেঞ্চ কর্মকর্তা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রিট আবেদনটি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে কার্যতালিকায় থাকলেও শুনানির সময় নথি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সম্পদ বিবরণী জমা না দেওয়ায় স্বাস্থ্য খাতের বিতর্কিত ঠিকাদার মোতাজজেরুল ইসলাম ওরফে মিঠুর বিরুদ্ধে চার বছর আগে একটি মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই মামলায় তদন্ত শেষে তাকে অব্যাহতির প্রার্থনা জানিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় দুদক, যা মহানগর বিশেষ জজ গ্রহণ করে অব্যাহতির আদেশ দিয়েছিল। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে ও মামলার অভিযোগ পুনরায় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে গত বছর অক্টোবরে রিটটি করেন ঢাকার বনশ্রীর বাসিন্দা মো. মনিরুজ্জামান। তার পক্ষে গত বৃহস্পতিবার আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী চঞ্চল কুমার বিশ্বাস। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চঞ্চল কুমার বিশ্বাস জানান, অজ্ঞতাবশত মিঠু নির্ধারিত সময়ের পর সম্পদের হিসাব বিবরণী দেন এবং তিনি স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত একজন করদাতা উল্লেখ করে তদন্ত কর্মকর্তা ওই মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন। আইন অনুসারে অজ্ঞতা কোনো ব্যক্তিকে তাঁর অপরাধ থেকে অব্যাহতি দিতে পারে না। স্বাস্থ্যসেবার অধিকার মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যে অন্যতম। স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মে মিঠু সিন্ডিকেট জড়িত বলে গণমাধ্যম ও বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবাসংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে এসেছে, এসব যুক্তিতে ওই রিট করা হয়। তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুনানির সময় নথি খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে নথি পাওয়া গেছে বলে জানতে পেরেছি। আশা করছি আগামী বৃহস্পতিবার শুনানি হবে।

এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, আমাদের কাছে আদালত একটি প্রতিবেদন চেয়েছিল আমারা তা আদালতে জমা দিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা আদালতে জানিয়েছি, তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত হয়েছিল, তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তাই আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। আদালত তা গ্রহণ করে তাকে অব্যাহতি দিয়েছে। মিঠুর বিরুদ্ধে আরও দুটি অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে বলেও জানান দুদকের আইনজীবী।

মামলার নথিপত্র থেকে জানা যায়, সম্পদ বিবরণী দাখিল না করার অভিযোগে ২০১৬ সালের ১০ মে মিঠুর বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানী থানায় মামলা করে দুদক। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করে মিঠুকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রার্থনা জানান তদন্ত কর্মকর্তা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১৭ এপ্রিল মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদেশ দেয়। আদেশে বলা হয়, তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে আসামি মোতাজজেরুল ইসলামকে মামলার অভিযোগের দায় হতে অব্যাহতি দেওয়া হলো। মামলাটি নিষ্পত্তি করা হলো। এই আদেশ বাতিল চেয়ে ওই রিট করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর