বুধবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বদলাচ্ছে অপরাধচিত্র, কমেনি মাদক মানব পাচার

রোহিঙ্গা ক্যাম্প

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

বদলাচ্ছে অপরাধচিত্র, কমেনি মাদক মানব পাচার

বদলে যাচ্ছে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অপরাধচিত্র। কয়েক মাসের ব্যবধানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে কমে এসেছে খুন, মারামারি ও হানাহানির মতো ঘটনা। তবে সার্বিক অপরাধ কমে এলেও মাদক ও মানব পাচারকারীরা বহাল রয়েছে আগের মতোই। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সার্বিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ভিন্নধর্মী কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ফলে সার্বিক অপরাধচিত্র আগের চেয়ে অনেক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অপরাধের বর্তমান চিত্র ধরে রাখতে।’

তবে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘চট্টগ্রামে যতগুলো বডি ফিটিং ইয়াবার চালান জব্দ করা হয়, এর মধ্যে সিংহভাগ চালানই আসে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পগুলো থেকে। বহনকারীদের উল্লেখযোগ্যই রোহিঙ্গা। কিন্তু ক্যাম্পের ভিতর অবস্থানকারী ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিষয়ে তথ্য থাকলেও চাইলেই ক্যাম্পে অভিযান চালানো যায় না। ক্যাম্পে অভিযান চালাতে গেলে নানা সমস্যা তৈরি হয়। এ সমস্যা নিরসনে উদ্যোগ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

জানা যায়, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে পালিয়ে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে কক্সবাজারের ৩৪টি শরণার্থী ক্যাম্পে। গত দুই বছর শরণার্থী ক্যাম্পগুলো ছিল এক রকম অপরাধীদের অভয়ারণ্য। মাদক ও মানব পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার হওয়ার পাশাপাশি এগুলো অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়।

 নিজেদের মধ্যে কোন্দলের জের ধরে খুন, গুম, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ড এখানকার নিত্য ঘটনা। গত অক্টোবরের পূর্ববর্তী এক বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় কমপক্ষে অর্ধশত, যার মধ্যে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে ৮ খুনের ঘটনা ঘটে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। এসব ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। এরপর অপরাধের রাশ টানতে নেওয়া হয় বিশেষ পরিকল্পনা। এর মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে টহল ও চেকপোস্ট বৃদ্ধি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের তালিকাভুক্ত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে ব্লক রেইড, সাইপ্রাইস রেইড বৃদ্ধি। পাশাপাশি প্রতিটা ক্যাম্পে চালু করা হয় বিট পুলিশিং। ফলে নিয়ন্ত্রণে আসে ক্যাম্পের সার্বিক অপরাধচিত্র। কক্সবাজার এপিবিএন-১৬ অধিনায়ক তারেক ইসলাম বলেন, ‘অক্টোবরের পর থেকে পাল্টে যেতে থাকে ক্যাম্পের অপরাধচিত্র। তিন মাসে টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে একটি খুন ও বিচ্ছিন্ন দু-একটি  ঘটনা ঘটে। অথচ মাস ছয়েক আগেও এমন চিত্র ছিল অকল্পনীয়।’

সর্বশেষ খবর