সোমবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বাইডেন-কমলা প্রশাসন ৪ হাজার পদে রাজনৈতিক নিয়োগ দিচ্ছে

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

এক্সিকিউটিভ ব্রাঞ্চ এবং স্বাধীন-দলনিরপেক্ষ কয়েকটি সংস্থায় ৪ হাজার পদে রাজনৈতিক নিয়োগ দিতে যাচ্ছে বাইডেন-কমলা প্রশাসন। নতুন প্রশাসনের দ্বারা এসব পদ পূরণ করার এটি প্রচলিত রীতি। এরমধ্যে ১২৫০ জনের মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে ইউএস সিনেটের অনুমোদনে।

এরমধ্যে কেবিনেট সেক্রেটারি (মন্ত্রিপরিষদের সদস্য), চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার (অর্থমন্ত্রীসহ রিজার্ভ ব্যাংকের প্রশাসক), জেনারেল কাউন্সেল, রাষ্ট্রদূত এবং আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ৮০০ জনের মনোনয়ন দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। ‘পার্টনারশিপ ফর পাবলিক সার্ভিস’ এবং ওয়াশিংটন পোস্ট সূত্রে এ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের পরই প্রতিরক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মনোনয়নের অনুমোদন দিয়েছে ইউএস সিনেট। এরপর গত সপ্তাহে অনুমোদন এসেছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও পরিবহনমন্ত্রীর। জানা গেছে, সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানাটানি চলতে থাকার মধ্যেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিশংসন ট্রায়াল নিয়েও সিনেটসহ কংগ্রেসকেও দেনদরবার চালাতে হচ্ছে। এসব কারণে বাইডেন মন্ত্রিসভার অবশিষ্ট সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে দেওয়া মনোনয়ন-শুনানিতে বিলম্ব ঘটছে। তবে দীর্ঘ ৪৭ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় সিক্ত জো বাইডেন ভিতরে ভিতরে রিপাবলিকানদের সঙ্গে সম্পর্ক মধুর করার ব্যাপারেও সচেষ্ট রয়েছেন। তাই সিনেটে ৫০-৫০ আসন নিয়েও বাইডেন নিজের নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণে বিন্দুমাত্র সংশয়ে নেই। এরই মধ্যে প্রতিনিধি পরিষদে বাজেট বিল পাশ হয়েছে। বহুল প্রত্যাশিত করোনা-স্টিমুলাস তথা আমেরিকা উদ্ধার বিলও রিপাবলিকানদের সমর্থনে সিনেটেও সামান্য কাটছাঁট করে হলেও পাস হবে বলে সবাই আশা করছেন। স্মরণ করা যেতে পারে, শপথ গ্রহণের দিনই ডোনাল্ড ট্রাম্পের দুইজন এবং বারাক ওবামার ছয়জন মন্ত্রীর অনুমোদন এসেছিল সিনেট থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের ফেডারেল দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউই অনুমোদন পাননি বাইডেনের মনোনীতদের মধ্যে। ট্রাম্প এবং ওবামা প্রশাসনের ১৫ জন ক্যাবিনেট সদস্যেরই অনুমোদন এসেছে ক্ষমতা গ্রহণের ১০০ দিনের মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী জো বাইডেনের রাজনৈতিক বিবেচনায় মনোনয়নপ্রাপ্তদের অনুমোদন আসতে হবে ইউএস সিনেট থেকে। মনোনয়নের পর মনোনীত ব্যক্তিকে বেশ কটি পর্ব অতিক্রম করতে হয়। এগুলো হচ্ছে আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন, কমপক্ষে একটি সিনেট কমিটির সুপারিশ (রেফারেল), কমিটির শুনানিতে অংশগ্রহণ, সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোট পাওয়া।

জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সিনেটের অনুমোদন সাপেক্ষে যে ১২৫০ পদ পূরণ করতে হয়, তারমধ্যে বাইডেন মাত্র ৭৮৯ জনকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত মনোনয়নই দেওয়া হয়নি ৪৯৪ পদে। মনোনয়ন প্রদানকারীদের মধ্যে মাত্র ছয়জনের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সিনেট। বিবেচনাধীন রয়েছে ৩৩ মনোনয়নের। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে দক্ষিণ ও সেন্ট্রাল এশিয়ান সম্পর্কিত সহকারী মন্ত্রীসহ কমপক্ষে ১২০ জন সহকারী মন্ত্রী, উপমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রদূতের মনোনয়ন এখনো বাকি রয়েছে। আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে সঠিক ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনতে এসব মনোনয়ন যতদ্রুত সম্ভব প্রদান করা জরুরি বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেছেন।

সর্বশেষ খবর