সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ভালোবাসা বসন্ত একাকার

মোস্তফা মতিহার

ভালোবাসা বসন্ত একাকার

শিমুল আর পলাশের রঙে বসন্ত জমেছিল গতকাল। বাঁধভাঙা উৎসবে মজেছিল তারুণ্য। তরুণীর শাড়ি আর তরুণের পাঞ্জাবির ক্যানভাসে ফাগুন চিত্রিত হয়েছে অনন্য শৈল্পিকতায়। ছিল গোলাপ, গাঁদাসহ হরেক ফুলের বৈচিত্র্যময় সজ্জা। আবাল-বৃদ্ধবনিতার ভিড়ে সারা দেশের মতো রাজধানীও জমজমাট ছিল দিনভর।

১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস, পয়লা ফাল্গুন, বসন্ত উৎসব একই দিনে হওয়ায় ঢাকার রাজপথ থেকে গলিপথ ছিল তারুণ্যে ভরপুর। এই ঢেউ আছড়ে পড়েছিল রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বলধা গার্ডেন, টিএসসি, বেইলি রোড, হাতিরঝিল, ধানমন্ডি লেক, রবীন্দ্র সরোবর, শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা আয়োজনে উদযাপন করেছে বসন্ত আর ভালোবাসার এই দিন।

শিল্পকলা একাডেমি : নাচ, গান, আবৃত্তি ও আলোচনাসহ নানা বর্ণাঢ্য আয়োজনে বসন্ত উদযাপন করে শিল্পকলা একাডেমি। এদিন বিকালে একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণের নন্দনমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় এই আয়োজন। দুই পর্বে বিভক্ত এই আয়োজনের প্রথম পর্বে ছিল আলোচনা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. বদরুল আরেফীন। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব মো. নওসাদ হোসেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড পারফরমিং আর্টস ও স্পন্দন নৃত্যদলের শিশুশিল্পীরা। বড়দের বিভাগে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নাচের দল নৃত্যালোক, বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টস, নৃত্যম, নন্দন কলা কেন্দ্র, মারমা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়, ধৃতি নৃত্যনালয়ের শিল্পীরা। দলীয় সংগীত পরিবেশন করে শিল্পকলা একাডেমি সংগীত দল, শিল্পকলা একাডেমি ভাওয়াইয়া সংগীত দল, সরকারি সংগীত কলেজ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পীরা। দ্বৈত সংগীত পরিবেশন করে সাজেদ আকবর ও সালমা আকবর, ইবরার টিপু-বিন্দু কণা এবং খায়রুল আনাম শাকিল-কল্পনা আনাম। একক সংগীত পরিবেশন করেন অপু আমান, সাব্বির, বিউটি এবং দিতি সরকার। নাটকের অংশবিশেষ পাঠ করেন শহীদুজ্জামান সেলিম ও রোজী সিদ্দিকী এবং অনন্ত হীরা ও নূনা আফরোজ। সবশেষে ব্যান্ডসংগীত পরিবেশন করে ব্যান্ডদল ‘স্পন্দন’।

উদযাপন পরিষদ : সদ্য প্রয়াত অভিনেতা আলী যাকেরের স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বসন্ত উদযাপন করেছে জাতীয় বসন্ত উদযাপন পরিষদ। গান, কবিতা, দলীয় নৃত্য আর বসন্ত কথন দিয়ে সাজানো ছিল এবারের আয়োজন। ফাগুনের প্রথম দিনের সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে যন্ত্রশিল্পী দীপেন সরকারের সুরের মধ্য দিয়ে ‘এসো মিলি প্রাণের উৎসবে’ সেøাগানের এবারের আয়োজনের সূচনা ঘটে। উৎসবের উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। কাজল দেবনাথের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন মানজার চৌধুরী সুইট। অনুষ্ঠানে একক আবৃত্তি করেন ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ও কাকলী। একক সংগীত পরিবেশন করেন বিমানচন্দ্র বিশ্বাস, সঞ্জয় কবিরাজ, কাইয়ুম, রাজিয়া মুন্নি, নবনীতা জাহিদ চৌধুরী, আঞ্জুমান ফেরদৌস কাকলি ও মারুফ। কীর্তন পরিবেশন করেন তাপসী ঘোষ। সমবেত সংগীত পরিবেশন করে সুরসপ্তক, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি ও সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে- নাচের দল স্পন্দন, আঙ্গীকম, ধ্রুপদ কলা কেন্দ্র, ভাবনা, মুদ্রা ক্লাসিক্যাল ড্যান্স, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি, স্বপ্নবিকাশ কলাকেন্দ্র, সাধনা সংস্কৃতি মন্ডল, নৃত্যাক্ষ, সুরবাহার ও নৃত্যম, মারমা সম্প্রদায়। নজরুলসংগীতের সঙ্গে যুগল নৃত্য পরিবেশন করেন- ধ্রুপদী নৃত্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। একক নৃত্য পরিবেশন করেন ওয়ার্দা রিহাব। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত প্রথম পর্বের আয়োজন শেষে বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত গেন্ডারিয়ার সীমান্ত গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণের সীমান্ত-সাহারা মঞ্চে ও উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরের আজমপুর প্রাইমারি স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় পর্বের আয়োজন।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর