সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

হাত ঘুরে নয়, সরাসরি যাবে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতা সহজে তাদের কাছে পৌঁছানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ইএফটি-এর মাধ্যমে (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) সরাসরি তাদের ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হবে মাসিক ভাতা। গভর্নমেন্ট টু পারসন (জিটুপি) প্রক্রিয়ায় সরকার সরাসরি সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগীকে ভাতা দেবে। আজ সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা জিটুপি প্রক্রিয়ায় সরাসরি তাদের ব্যাংক হিসাবে পাঠানোর কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ১ লাখ ৬৮ হাজার মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের উপকার ভোগীকে  জানুয়ারি মাসের ভাতা বাবদ ১৮২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরাসারি ভাতা ভোগীর ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হবে। পর্যায়ক্রমে সব মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা জিটুপি প্রক্রিয়ায় দেওয়া হবে। এতে মুক্তিযোদ্ধাদের ভোগান্তি লাঘব হবে। এ পদ্ধতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের সহজে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। মন্ত্রণালয় থেকে প্রতি জেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যানুপাতে সম্মানী ভাতা বাবদ অর্থ জেলা প্রশাসক হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুকূলে আর বরাদ্দ দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, আজ এ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পাঁচটি উপজেলা সরাসরি যুক্ত হবে। এর মধ্যে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার ২৪৯ জন, কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার ৪৫৬ জন, খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার ২১৮ জন, চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলার ১২৪ জন এবং মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার ৪২২ জনসহ মোট ১ হাজার ৪৬৯ জন মুক্তিযোদ্ধাকে ভাতা দেওয়া হবে। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন। সারা দেশে ১ লাখ ৯২ হাজার ৫৩২ জন মুক্তিযোদ্ধাকে প্রচলিত পদ্ধতিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জনপ্রতি মাসিক ১২ হাজার টাকা সম্মানী ভাতা দেওয়া হয়। এ ছাড়া শহীদ, যুদ্ধাহত ও খেতাবপ্রাপ্ত ১২ হাজার ৬৭৪ জন মুক্তিযোদ্ধাকে শ্রেণিভেদে ১৫ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত সম্মানী ভাতা দেওয়া হয়। সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় উপকারভোগীর অনুকূলে বিতরণ করা হয়। অন্যদিকে শহীদ, যুদ্ধাহত ও বেসামরিক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট এবং বিভিন্ন বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সংশ্লিষ্ট বাহিনীর মাধ্যমে মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়। মোট ভাতাভোগী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৫ হাজার ২০৬ জন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১ লাখ ৭৯ হাজার ৭৭৪ জন মুক্তিযোদ্ধার পূর্ণাঙ্গ তথ্য ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে (এমআইএস) এরই মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অবশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য সন্নিবেশ করার কাজ চলছে। খুব দ্রুতই তা শেষ হবে। এমআইএস এ জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে সব জীবিত ও মৃত মুক্তিযোদ্ধার ওয়ারিশদের পরিচিতি নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে একজন মুক্তিযোদ্ধার সব তথ্য, ব্যাংক হিসাব এবং মোবাইল নম্বর সংযোজন করা আছে।

সর্বশেষ খবর