মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ইসলামী দলগুলো কী চায়

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

ইসলামী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো জাতীয় নির্বাচনের সময় এলে জোটভিত্তিক কার্যক্রম জোরদার করে। বর্তমানে স্বতন্ত্রভাবে নিজেদের সংগঠন শক্তিশালী করতে ব্যস্ত সময় পার করছে। এর বাইরে করোনাকালে মানুষের পাশে দাঁড়ানো ছাড়াও নারী নির্যাতন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ নানা বিষয়ে প্রতিনিয়ত সরকারের সমালোচনায় দলীয় কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪০। এর মধ্যে ইসলামী বা ইসলামপন্থি দল ১০টি। নিবন্ধনের বাইরে ইসলামী দল বা সংগঠন কতগুলো তার কোনো পরিসংখ্যান নেই। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ইসলামী দলগুলো হচ্ছে- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, জাকের পার্টি ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের সঙ্গে রয়েছে খেলাফত মজলিস ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। আর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটে রয়েছে তরিকত    ফেডারেশন। ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ১৪-দলীয় জোটে না থাকলেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে রয়েছে তাদের সুসম্পর্ক। ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস একসময় বিএনপির জোটে ছিল। বর্তমানে তারা স্বতন্ত্র অবস্থানে। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ও জাকের পার্টিও স্বতন্ত্রভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে ইসলামী দলগুলোর মধ্যে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সংগঠন শক্তিশালীকরণে জোর দিচ্ছেন দলের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম চরমোনাই পীর। দলীয় সরকারের অধীনে হওয়ায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি তারা। তবে একাদশ সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ২৯৯ আসনে প্রার্থী দেয় দলটি। অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচনের দিন ভোট বর্জন করে। বর্তমানে ইসলামী আন্দোলন বিভিন্ন ইস্যুতে মাঠে সরব। জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধের জন্য লড়াই করে যাচ্ছে সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর নেতৃত্বাধীন তরিকত ফেডারেশন ও লায়ন এম এ আউয়ালের নেতৃত্বাধীন ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টি।

এম এ আউয়াল সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলন করে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি জানিয়েছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ ও বাংলাদেশ সরকারের অনুদানে নির্মিত ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক প্রকল্প বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নামকরণের দাবি জানান সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়াল। এদিকে খেলাফত মজলিস সরকারের নানা ব্যর্থতার অভিযোগে মাঠে রয়েছে। ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান হাসানাত আমিনী ও মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহর দাবি, করোনাকালে তারা ব্যাপক কাজ করছেন। চেয়ারম্যান এম এ মান্নান ও মহাসচিব এম এ মতিনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট একাদশ নির্বাচনের আগে এরশাদের নেতৃত্বাধীন ‘সম্মিলিত জাতীয় জোটে’ অংশ নেয়। পরে জোট ত্যাগ করে স্বতন্ত্র অবস্থানে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছে দলটি। প্রতিটি ইস্যুতে মাঠে রয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট। করোনাকালে মানুষের পাশে ছিল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। এদিকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ জানান, করোনাকালে এবং বিভিন্ন দুর্যোগে মানুষকে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন তারা। অক্সিজেন সরবরাহ করেছেন। ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস দিয়েছেন সারা দেশে। অন্যদিকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামও ব্যস্ত তাদের দল গোছাতে।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর